সরকারি স্কুলের এ কী হাল!

শিশুদের পাঠে মনোযোগী করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শ্রেণিকক্ষ সাজানোর নির্দেশনা আছে। অথচ আনোয়ারার এক স্কুলে ময়লা-আবর্জনা, ভাঙা বেঞ্চ-টেবিল, ভাঙা ফ্যান দিয়ে চলছে পাঠদান। পলেস্তরা খসে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে শ্রেণিকক্ষ। আবার স্কুলটিতে নেই বিশুদ্ধ পানি কিংবা ওয়াশরুমের ব্যবস্থাও!

আনোয়ারার দক্ষিণ গহিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি। প্রতিবছর সরকারের বাজেটের টাকায় উন্নয়নের কোনো চিহ্নই নেই স্কুলটিতে। তবে স্কুল কমিটির সভাপতি ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রঞ্জন ভট্টাচার্য আগামীতে উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছেন।

আরও পড়ুন: পরীক্ষা নয়, লটারি—যেভাবে ভর্তি হতে হবে সরকারি স্কুলে

সরেজমিন দেখা যায়, স্কুলের ভবনের পলেস্তরা খসে পড়ছে। সিঁড়ির গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভেতরে ঢুকতেই মাকড়সার জাল আর ময়লা-আবর্জনা। শ্রেণিকক্ষে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও তা বিচ্ছিন্ন। ফ্যানের পাখাগুলোও ভেঙে উপরে ঝুলছে, বেঞ্চ-টেবিলগুলো এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। স্কুলের এক কক্ষে তখন চলছিল পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান।

জানা যায়, দক্ষিণ গহিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিগত সময়ে সরকারি বরাদ্দের ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ ২ লাখ টাকা, ওয়াশ ব্লক মেরামতে ২০ হাজার টাকা, স্লিপ বরাদ্দে ৫০ হাজার টাকা, রুটিন মেইন্টেনেন্সে ৪০ হাজার টাকা, প্রাক-প্রাথমিক ১০ হাজার টাকাসহ ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার বরাদ্দ পায়। এ বরাদ্দের টাকায় দুটি কক্ষে রঙ করা, ৪টি জানালার পর্দা, ৪টি শিক্ষকদের টেবিল-চেয়ার ও প্রধান শিক্ষকের জন্য ১টি ফ্যান কেনা ছাড়া আর কিছুই হয়নি। এছাড়া স্কুলের মেরামতের জন্য ১৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের বরাদ্দ ফেরত চলে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ২টি লোহার গ্রিল, ২টি স্টিল আলমিরা ও লোহার কিছু বেঞ্চ কাউকে না জানিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: স্কুলে ভর্তি—সরকারির সঙ্গে এবার বেসরকারিতেও লটারি, আবেদন শুরু ২৫ নভেম্বর

স্থানীয় বাসিন্দা মো. মোজাম্মেল জানান, স্কুলটিতে সংস্কারকাজ তারা কখনো দেখেনি। বিভিন্ন সময় বাজেটের কথা শুনেছেন, তবে কাজ করতে দেখেননি কেউ। এখানে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে অনেক অভিবাবক তাদের ছেলেমেয়েদের অন্য স্কুলে নিয়ে গেছে।

যোগাযোগ করা হলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইসমাইল আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বরাদ্দ পাওয়া টাকায় উন্নয়নকাজ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়েছি গত মার্চে। এর পর থেকে আমি কাজ করছি।

স্কুলের বেহাল চিত্র তুলে ধরা হলে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, স্কুলের সমস্যাগুলো আগামীতে সমাধান করা হবে। পানি ও ওয়াশরুম এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা হবে।

এসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!