শেষ ভালো না হলেও সব ভালো

প্রবাদ আছে— শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। তবে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজে প্রবাদটা সত্য হলো না। শেষটা ভালো না হলেও সব কিন্তু ভালো হয়েছে বাংলাদেশের।

শুক্রবার (২৮ মে) সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ হেরেছে। তবে এ হার কোনো প্রভাব ফেলেনি সিরিজের ফলাফলে। কারণ প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই যে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এটিই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম কোনো ওয়ানডে সিরিজ জয়।

তবে শেষটা ভালো না হওয়ায় একটু আক্ষেপ বাংলাদেশের থাকতেই পারে। কারণ ১৮ বছরেও যে অধরাই রয়ে গেছে লঙ্কানদের হোয়াইটওয়াশ করার স্বপ্ন। হোয়াইটওয়াশতো হলোই না উল্টো হারতে হয়েছে বড় ব্যবধানে।

শুক্রবার ঢাকার মিরপুরে শেষ ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার কাছে ৯৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচে যেভাবে হেরেছিল শ্রীলঙ্কা ঠিক সেভাবেই হেরেছে বাংলাদেশ। বলতে গেলে কুশল পেরেরার সেঞ্চুরি ও চামিরার ৫ উইকেট লঙ্কানদের জয় সহজ করে দেয়।

তবে আজ টসভাগ্যও ভালো ছিল কুশল পেরেরার। প্রথম ব্যাট করতে নেমে সতীর্থ গুণাতিলকাকে নিয়ে শুরুটা ভালোই করেন তিনি। সমানতালে রান তুলে যাচ্ছিলেন দু’জন। উদ্বোধনী এ জুটি ভাঙে দলীয় ৮২ রানে। ১২তম ওভারে এসে গুণাতিলকাকে (৩৯) বোল্ড করে ফেরান তাসকিন। এর তিন বল পর নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান নিসাঙ্কাকে। রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন তিনি।

এক ওভারে দুই উইকেট হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে দেখেশুনে খেলতে থাকেন ‘দুই কুশল’। কিন্তু তাদের জুটির বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনি উইকেটে। ২২ রান করা কুশল মেন্ডিসকে সাজঘরে পাঠিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট নেন তাসকিন।

চতুর্থ উইকেটে ধনঞ্জয়াকে নিয়ে ৩৯ ওভারে দলের সংগ্রহ দুইশ’র ওপারে নিয়ে যান কুশল পেরেরা। শেষ দশ ওভারে রানের গতি বাড়াতে গিয়ে বড় শট খেলার চেষ্টা করেন তিনি। আর সেই চেষ্টা কাল হয়ে দাঁড়ায় তাঁর জন্য। শেষ পর্যন্ত ১২০ রানের অনন্য ইনিংস খেলে বিদায় নেন শরিফুলের বলে।

কুশল পঞ্চাশতম ব্যাটসম্যান হিসেবে মিরপুরের মাঠে সেঞ্চুরি করেন। সেই হিসেবে ‘হোম অফ ক্রিকেট’ খ্যাত শেরে বাংলা স্টেডিয়ামেরও একটা ‘হাফ সেঞ্চুরি’ হয়েছে শুক্রবার। অর্থাৎ এ পর্যন্ত অর্ধশত ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করেছেন এই মাঠে।

এদিকে নিচের সারির ব্যাটসম্যানদের নিয়ে বাকি কাজটা চালিয়ে যান ধনঞ্জয়া। শেষ পর্যন্ত ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। স্পিনার ব্যাটসম্যান হাসারাঙ্গার ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের সামনে ২৮৭ রানের বড় লক্ষ্য দাঁড় করায় লঙ্কানরা।

জবাবে খেলতে নেমে শুরু থেকেই খেই হারাতে থাকেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। দলের খাতায় ২৮ রান তুলতেই ‘নাই’ হয়ে যান প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যান। তামিম (১৭), নাঈম (১) ও সাকিবকে (৪) ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠান চামিরা।

এরপর চতুর্থ উইকেট মোসাদ্দেক নিয়ে লঙ্কানদের বোলারদের ভালোই সামাল দিচ্ছিলেন মুশফিক। কিন্তু আজকের দিনটি তাঁর ছিল না। প্রথম দুই ম্যাচে ভালো ইনিংস খেললেও এদিন ২৮ রান করেন ফিরে যান রমেশ মেন্ডিসের বলে।

মুশফিক ফিরে গেলে মোসাদ্দেকের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ জুটি গড়েন। কিন্তু সেই জুটিকেও উইকেটে জমতে দেননি লঙ্কান ম্পিনার রমেশ। নিজের দ্বিতীয় উইকেট হিসেবে মোসাদ্দেককে ফেরান তিনি। মোসাদ্দেক আউট হওয়ার আগে খেলেন ৫১ রানের ঝলমলে ইনিংস।

১২৫ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশের পরাজয়ের পাল্লাটাই বেশি ভারী হচ্ছিল। দলের খাতায় ৫৫ রান যোগ করতেই নিচের সারির ৪ ব্যাটসম্যান ফিরে গেলে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী তখন মুস্তাফিজ।

শেষ পর্যন্ত হাফ সেঞ্চুরিটা করলেও ফার্নান্দোর বলে মারতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হয়ে ১০ম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি। তবে এর আগেই অন্তত তিন অঙ্কের রানের ব্যবধানে হারা এড়ানোটা নিশ্চিত করেন মাহমুদউল্লাহ।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!