শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাদাত

গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন বিএনপির সাবেক জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সৈয়দ সাদাত আহমেদ।

বুধবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে মামলায় ১৭ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এদের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকও রয়েছেন। বাকি আসামিদের বেশিরভাগই সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তা।

বিএনপি নেতা সৈয়দ সাদাত আহমেদ এবিএন গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি। ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট আওয়ামী লীগ শাসনামলে তিনি গুমের শিকার হন। ৪ মাস ৮ দিন অজানা স্থানে বন্দী থাকার পর তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ৮ মাস কারাবন্দী থাকার পর মুক্ত হয়ে তিনি ফের পটিয়ার রাজনীতিতে সক্রিয় হন। গুম হওয়া সেই সাদাত এবার আলোচনায় মামলা করে।
বিএনপি নেতা সৈয়দ সাদাত আহমেদ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমার মতো আরও অনেক পরিবার গুমের শিকার হয়েছে। অনেকেই প্রিয়জন হারিয়ে নিঃস্ব। এই গুম শুধু একজন ব্যক্তির নয়, এটি গোটা জাতির বিবেককে হত্যা করেছে। আমি এই মামলা করছি তাদের জন্য, যাদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গুমের শিকার পরিবারগুলোর ন্যায়বিচারের দাবিতে আমি এ মামলা দায়ের করেছি।

এদিকে মামলা দায়েরের পর আজ সাংবাদিকদের সৈয়দ সাদাত বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পতিত ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকার লাখো-কোটি বিএনপি নেতাকর্মীসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দল-মত, সুশীল সমাজসহ সব বিরোধী পক্ষকে নির্মুল করতে শুরু করে গুম-খুন। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম করে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। কাউকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে, কাউকে নির্যাতন করে আজীবনের জন্য পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। এখনো এম ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের মতো বিএনপির নিবেদিত শত শত নেতাকর্মীর সন্ধান মেলেনি। আমি সৌভাগ্যবান, সাড়ে চার মাস গুম থাকার পরও ফেরত আসতে পেরেছি। তবে আয়নাঘরে বন্দী থাকার যন্ত্রণা, নির্যাতনে মানসিক ট্রমা আজো বহন করছি।

তিনি বলেন, আমি বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্যের পাশাপাশি আমাদের গণতন্ত্রের মা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় গঠিত সিএসএফে কাজ করেছি। একইসাথে কূটনৈতিক উইংয়ের সাথেও একটা যোগাযোগ ছিল। আর এটাকে টার্গেট করে, আমার কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করতে ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই গুমের কারণে শুধু আমি নই, আমার পুরো পরিবারকে অসহ্য কষ্ট করতে হয়েছে। শুধু রাজনৈতিক, পারিবারিক ক্ষতিই নয়; আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যও ধ্বংস করেছে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ। আর এগুলো শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশেই ঘটেছে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm