শুকনা মরিচের ঝাল আর আদার ঝাঁজে কাহিল ক্রেতা স্বস্তি খুঁজছে সবজিতে

চলতি মাসের শুরুতে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম মাসের শেষের দিকে এসে কমেছে। তবে দেশি শুকনা মরিচ ও আদার দাম এখনও বাড়ছেই। বেড়েছে ছোলা-রসুনের দামও। তবে কমেছে সবজি ও মুরগির দাম। সবমিলিয়ে শীতের শুরুতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে।

নগরের চকবাজার, বহদ্দারহাট ও কালামিয়া বাজারে সরেজমিন দেখা যায়, প্রতি কেজি পেঁয়াজ মান অনুযায়ী ৩৫-৪০ টাকয় বিক্রি হচ্ছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে পেঁয়াজের এ দর অর্ধশতক ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

আদা বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৮০ টাকায়। মাসখানেকের ব্যবধানে আদার দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৬০ টাকা!

ছোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০-৯০ টাকা দরে। যা সপ্তাহখানেক আগে বিক্রি হয়েছিল ৭০ টাকা।

দেশি শুকনা মরিচের দাম ‘বেপরোয়া’ গতিতে ছুটেই চলেছে। মাসখানেকের ব্যবধানে কেজিতে প্রায় ১৩০ টাকা বেড়ে শুকনা মরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৮০ টাকায়!

এছাড়া রসুন, মসুর ডাল ও মটর ডালের দর স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি রসুন ১১০ টাকা, মসুর ডাল (ছোট) ১৪০ টাকা, মসুর ডাল (বড়) ১০০ টাকা ও মটর ডাল ৭০ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

চকবাজার কাঁচাবাজার এলাকার মুদি দোকানি মো. মামুন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, পেঁয়াজের দাম এখন কমে এসেছে। সামনে আরো কমতে পারে। তবে আদা আর শুকনা মরিচের দাম কিছুদিন পরপর বাড়ছে। গত মাসের শেষদিকে শুকনা মরিচের দাম ছিল ৩৫০ টাকা, এ মাসের শুরুতে কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ৪৫০ টাকা।

তিনি বলেন, এখন কেজিতে আরো ৩০ টাকা বেড়ে বর্তমানে শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা। আদার দামেরও একই অবস্থা। এ মাসে কয়েক দফা বেড়ে আদার কেজি এখন ১৮০ টাকা।

এদিকে শীতের শুরুতে বাজারে বেড়েছে সবজির সরবরাহ। সবজির দোকানগুলো নানা ধরণের শীতকালীন সবজিতে ভরে গেছে। সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে। বেগুন ও মুলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়। ৭-৮ দিন আগেও এ দুটি সবজির কেজি ছিল ৫৫-৬০ টাকা।

খুচরা বাজারে গাজর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল ১২০-১৩০ টাকায়। মিষ্টি কুমড়ার কেজি এখন ৩০-৩৫ টাকা, ২-৩ দিন আগেও এর দাম ছিল ৪০-৪৫ টাকা।

শিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫-৫০ টাকায়। মাসের ব্যবধানে শিমের দাম কেজিতে প্রায় ৭৫ টাকা কমেছে!

লাউ প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪-৫ দিন আগেও এ দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা, মাসজুড়ে টমেটোর এ দর ছিল প্রতি কেজি ১০০ টাকারও বেশি।

এছাড়া শসা বিক্রি হচ্ছে মান অনুযায়ী প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০-৪৫ টাকা, আলু ১৫-২০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৩৫ টাকা, করলা ৫০ টাকা ও ঢেঁড়স ৫৫-৬০ টাকা।

এদিকে বাজারে আসতে শুরু করেছে দেশি আলু। নতুন এ আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০ টাকায়। বাজারে সরবরাহ বাড়লে দেশি আলুর দাম কমে আসবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

অপরদিকে মাসের শেষভাগে আরেক দফা কমেছে মুরগির দাম। খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, যা আগে ছিল ১৭০ টাকা। কেজিতে ৫০ টাকা কমে সোনালি ও পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা। এছাড়া দেশি মুরগি বিক্রির কেজি ৫০০-৫৫০ টাকা (সাইজ অনুযায়ী)।

নগরের খুচরা বাজারে সবজির দাম কমায় কিছুটা স্বস্তির ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের ক্রেতা নাজিম উদ্দিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম বাড়তি। এর মধ্যে এখন সবজির দাম কিছুটা কমে আসায় একটু স্বস্তি পাচ্ছি। ফুটপাত বা ভ্যানে করে যারা খুচরা সবজি বিক্রি করছেন তারা কাঁচাবাজারের চেয়ে একটু বাড়তি দামে বিক্রি করছে। তাই একটু দূরে হলেও সরাসরি কাঁচাবাজারে এসে সবজি কিনছি। কারণ কাঁচাবাজারে কেজিতে প্রায় ১০-২০ টাকা কমে সবজি পাওয়া যায়।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm