রূপালী উৎসবের অপেক্ষায় ৩৮ জেলেপল্লী
৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর আবারো সাগরে মাছ আহরণে নামছে জেলেরা। কর্ণফুলী নদীর মোহনার সন্দ্বীপ চ্যানেলের সীতাকুণ্ড উপজেলাসহ উত্তর চট্টগ্রামের প্রায় ৫২ হাজার মৎস্যজীবী শনিবার (২৪ জুলাই) থেকে সাগরে নামছে রূপালি ইলিশ শিকারে।
কর্ণফুলী মোহনার সন্দ্বীপ চ্যানেলের উত্তর চট্টলা উপকূলীয় ও সীতাকুণ্ড ১ নম্বর সৈয়দপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত ৩৮টি জেলেপল্লীর প্রায় ৫২ হাজার মৎস্যজীবী পরিবারের বসবাস। এসব জেলেপল্লীতে থাকে প্রায় পৌনে চার লাখ মানুষ।
সরেজমিন দেখা গেছে, অনেক জেলে তাদের জাল ও নৌকা নিয়ে সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আবার অনেকে শেষ মুহূর্তে জালের মেরামত করে নিচ্ছে। তবে ভোর হতেই কেউ কেউ বোট নিয়ে ইলিশ আহরণে ছুটে গেছে সাগরের বুকে।
উত্তর চট্টলা উপকূলীয় জলদাশ কল্যাণ সমবায় ফেডারেশনের সভাপতি লিটন দাশ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ইলিশ শিকারে সরকারের দেওয়া ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। আমরা মৎস্যজীবী পরিবারগুলো ভোর থেকেই গভীর সমুদ্রে রওনা দেওয়া শুরু করেছি।
চট্টলা উপকূলীয় জলদাশ কল্যাণ সমবায় ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল দাশ বলেন, যে সময়ে সাগরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, সে সময় ছিল ইলিশ শিকারের ভরা মৌসুম। নিষেধাজ্ঞার কারণে দক্ষিণ শীতলপুরের অনেক পরিবার ঠিকমত দু’বেলা খাবার পাননি। জুন-জুলাই-আগস্ট মাস ছাড়া বছরের বাকি সময় তেমন মাছ পাওয়া যায় না সাগরে।
এ বিষয়ে কথা হয় চট্টলা উপকূলীয় জলদাশ কল্যাণ সমবায় ফেডারেশনের সহসভাপতি বাঁশবাড়িয়া বোয়ালীয়াকূল এলাকার বাসিন্দা জেলেনেতা উপেন্দ্র দাশের সঙ্গে। তিনি বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর শনিবার ভোর থেকে সাগরে ইলিশ শিকারে রওনা দিয়েছে অনেক মৎস্যজীবী। নিষেধাজ্ঞার কারণে মৎস্যজীবী পরিবারগুলো এতদিন মানবেতর জীবনযাপন করেছে। ঋণ করেও অনেকের সংসার চালাতে হয়েছে।
শুরুতে সাগরে তেমন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, আগে প্রতি বোটে ৫০ থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত ইলিশ পাওয়া গেলেও এবার এখনো পর্যন্ত ১০-১২ কেজির বেশি পাওয়া যায়নি। তবে আশা করছি এবার সাগরে আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যাবে।
চলতি বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। এ সময়ে ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ে। রূপালি ইলিশের উৎপাদন বাড়াতেই ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
ডিসি