রাত হলেই বাঁশখালীর ৫ স্পট থেকে পাচার হয় কোটি কোটি টাকার মাছ

নিষেধাজ্ঞা চলছে—বরফকলও চালু

প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও বাঁশখালী সমুদ্র উপকূলের ৫টি স্পটে প্রতিদিন নোঙর করছে মাছভর্তি শতাধিক ফিশিং বোট। প্রতি রাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রধান সড়ক হয়ে ট্রাকে ট্রাকে চালান হচ্ছে এসব মাছ। মাছ চালানের সময় ট্রাকগুলোর সামনে-পেছনে থাকে অর্ধশতাধিক যুবক। তবে সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরের এতে কোনো মাথাব্যথা নেই। ফলে মাছ ধরার মহোৎসব চলছে সেখানে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাঁশখালীর শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ, চাম্বল বাংলাবাজার, ছনুয়া-কুতুবদিয়া ঘাট, খানখানাবাদ, কদমরসুল— এ পাঁচ স্পটের সমুদ্র উপকূলে শতাধিক ফিশিং বোট প্রতিদিন সামুদ্রিক মাছ খালাস করছে। মাছগুলো প্রতিরাতে বাঁশখালীর প্রধান সড়ক হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চালান দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় জেলেরা জানান, প্রভাবশালী ‘বহদ্দারদের’ চাপের মুখে উপকূল ছেড়ে সহস্রাধিক ফিশিং বোট নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে গেছে কয়েক হাজার মাঝিমাল্লা।

জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আগামী ২৩ জুলাই। এর আগে ২০ মে থেকে শুরু হয়েছিল এই নিষেধাজ্ঞা।

আরও পড়ুন : বাঁশখালী-আনোয়ারায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ রক্ষায় বিশাল বরাদ্দ

এদিকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের আঁধারে প্রতিদিন আহরণ করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সামুদ্রিক মাছ। এসব মাছ বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বেচাকেনাও চলছে।

অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরকে ম্যানেজ করে কতিপয় প্রভাবশালী ‘বহদ্দাররা’ প্রকাশ্যে সামুদ্রিক মাছের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। বাঁশখালীতে ২২টি বরফকলও চালু রেখেছে মৎস্যজীবিরা। প্রশাসনিকভাবে এসব বরফ কল বন্ধ রাখার নিয়ম নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বাঁশখালী উপজেলার বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, সাগর বিশাল এলাকা। আমাদের লোকবল কম। তাই জেলেরা আড়ালে মাছ ধরছে। তবে আমাদের অভিযান চলছে। সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে মনিটরিং বাড়ানোর জন্য বলা হবে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাঁশখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুল ইসলাম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বরফ কলগুলোর বিদ্যুৎ বন্ধ করা দরকার পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম সাহেবের। কিন্তু তিনি বন্ধ করছেন না। ইতোমধ্যে কয়েকটি মাছের চালান আটকের পাশাপাশি জরিমানা করা হয়েছে। প্রজনন মৌসুমে পরিপূর্ণ মাছ ধরা বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকল প্রশাসনের আন্তরিক হওয়া উচিত।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm