রাত পোহালেই নির্বাচন : বাঁশখালীতে আওয়ামী লীগ—বিএনপি লড়াই, নাকি অন্য কিছু?

বাঁশখালী পৌরসভা নির্বাচন আগামীকাল রোববার (১৬ জানুয়ারি)। এখানকার ৯ ওয়ার্ডে ভোট হবে ইভিএম পদ্ধতিতে।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি লড়াই নাকি অন্যকিছু?౼এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে পৌর এলাকার ভোটারদের মনে।

এসএম তোফাইল বিন হোসাইনের নৌকা প্রতীক পাওয়ার কারণেই এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তাদের মনে। উপজেলার আটজন বাঘা বাঘা নেতাকে টপকে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান। তিনি বাঁশখালী আদালতের আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপির সমর্থনও আছে তাঁর প্রতি।

তোফাইল নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী না হলেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ ছিল নেতাকর্মীদের মনে। এরমধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ৩ জন নৌকার পক্ষে কয়েকদিন মাঠে নামলেও বাকিদের দেখা মেলেনি।

তবে এদের মধ্যে কেউ কেউ দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সিআইপির অনুসারী বলে শোনা গেছে। মুজিবুর রহমান গতবার দলীয় মনোনয়নে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে চেয়ে ব্যর্থ হন।

অপরদিকে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতা ও বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল ইসলাম হোসাইনি। তিনি মোবাইল ফোন প্রতীকে নির্বাচন করছেন।

আরও পড়ুন : আনোয়ারা ইউপি নির্বাচন—নৌকা ৮, বিদ্রোহী ১

তবে কামরুল ইসলাম সিআইপি মুজিবুর রহমানের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবস্থাপক ছিলেন।

এদিকে কামরুল ইসলাম হোসাইনিকে নিয়ে যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হন সেজন্য নৌকা প্রতীকের সমর্থনে মিছিল সহকারে একবার তোফাইলের নির্বাচনি সভায় গিয়েছিলেন মুজিবুর রহমান সিআইপি।

কামরুল ইসলাম হোসাইনি সম্প্রতি দুর্গাপূজার সময় বাঁশখালী কেন্দ্রীয় কালীবাড়িতে হামলা মামলার ২ নম্বর আসামি। উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিনে এসে তিনি মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।

তবে এ ব্যাপারে কামরুল ইসলাম হোসাইনি দাবি করেন, মেয়র প্রার্থী যাতে হতে না পারি সেজন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি মন্দির পোড়া ঘটনার আগে থেকে দুর্ঘটনায় পা ভেঙে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে লড়বেন ২ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৫ জন। মোট ভোটার ২৬ হাজার ৯৮০ জন। পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ৯৪ জন এবং নারী ভোটার ১২ হাজার ৮৮৬ জন। ৯টি ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্রেই ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হবে।

বাঁশখালী পৌরসভা নির্বাচনে নিয়োজিত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ৯টি ওয়ার্ডে ৯ জন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এছাড়া ব্যাপকসংখ্যক বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা অবনতি করে কেউ রেহাই পাবে না।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে কেন্দ্রে নিয়োজিত বাহিনী ছাড়াও রাস্তার অলি-গলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম হোসাইনি বলেন, নানা ভয়-ভীতির মধ্যে নির্বাচনে লড়ে যাচ্ছি। সুষ্ঠু ভোট হলে আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব। জনগণ পৌর এলাকায় আমার করা আগের উন্নয়ন ভুলেনি।

অপরদিকে নৌকা প্রার্থী এসএম তোফাইল বিন হোসাইন বলেন, বাঁশখালী পৌরসভা নৌকার ঘাঁটি। আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব। জনগণ নৌকার উন্নয়নে বিশ্বাসী।

উজ্জ্বল/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!