অমানবিক—টাকার জন্য ১৯ ঘণ্টা লাশ আটকে রাখল মেডিকেল সেন্টার

টাকার জন্য ১৯ ঘণ্টা এক নারীর লাশ আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) নগরের ও আর নিজাম রোড এলাকার হাসপাতালটিতে এ অমানবিক ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় শামসুন নাহার (৪০) নামে এক নারীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে। এর আগে গত ৩০ জুলাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে টানা ৩৬ দিন এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

আরও পড়ুন: হাত ভাঙল নবজাতকের—ডাক্তারের ‘অবহেলা’ ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে

মারা যাওয়া ওই নারী নগরের হামজারবাগের বাসিন্দা। তার স্বামী সৌদি প্রবাসী।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসার শুরু থেকে মারা যাওয়া পর্যন্ত বিল দেওয়া হয় ১৪ লাখ ৬২ হাজার ৬৮৪ টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ টাকা আগেই জমা দিয়েছিল পরিবার। শুক্রবার রাত ২টার দিকে আরও ৬ লাখ টাকা জমা দিতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরো টাকা দিয়ে লাশ বুঝে নেওয়ার কথা বলে।

পরে আরও দুই লাখ টাকা জমা দিয়ে বাকি টাকার জন্য একটি ব্যাংক চেক দিলে শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে স্বজনদের লাশ বুঝিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে দীর্ঘক্ষণ ফেলে রাখায় লাশ পচে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে বলে জানান মৃতের স্বজনরা।

স্বজনরা জানায়, গত ৩৬ দিন ওই হাসপাতালে থাকলেও এর মধ্যে আইসিইউতে ছিলেন ২৫ দিন। ৩৬ দিনে শামসুন নাহারের বেড ভাড়া ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা। ওষুধ খরচ ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বেড সাইড প্রসিডিওর নামে খরচ দেখানো হয়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। নার্সিং সার্ভিস চার্জ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার। আর কনসালট্যান্ট ফি ৬০ হাজার টাকা।

এ ধরনের বিলকে অযৌক্তিক এবং ভুতুড়ে বলে মন্তব্য করেন ওই নারীর স্বজনরা।

আরও পড়ুন: পার্কভিউ হাসপাতাল—আইসিইউ বেডেই ‘সাহসী’ অপারেশনের ‘যুদ্ধজয়’

শামসুম নাহারের ভাগিনা মো. রবিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমার মেঝ মামি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় মেডিকেল সেন্টারের আইসিইউতে মারা গেছেন। এর আগে ২ লাখ, দেড় লাখ ও ১ লাখ করে পর্যায়ক্রমে সাড়ে ৪ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করি। মোট বিল আসে ১৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা। রাত ২টার দিকে নগদ ৬ লাখ টাকা জমা দিই। কিন্তু বাকি টাকা না দেওয়ায় তারা লাশ আটকে রাখেন। পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে জানাজানি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ বুঝিয়ে দিতে বাধ্য হন। এর মধ্যে আরও দুই লাখ টাকা এবং বাকি টাকার জন্য একটি চেক দিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!