রাউজানে চেয়ারম্যানের দখলে স্কুলের জমি, রাতের আঁধারে উপড়ে ফেলল খুঁটি

রাউজানে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০ শতক জমি দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রশাসন জায়গা পরিমাপ করে খুঁটি পুতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ওই জমি বুঝিয়েও দেয়। কিন্তু রাতের আঁধারে উপড়ে ফেলা হয়েছে প্রশাসনের দেওয়া সেই খুঁটি।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিদুয়ানুল ইসলামের নিদের্শনায় সার্ভেয়াররা পরিমাপ করে স্কুলের বেহাত হওয়া জায়গায় খুঁটি পুতে দেয়। কিন্তু পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান শিক্ষক স্কুলে গিয়ে খুঁটিগুলো দেখতে না পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেন।

এদিকে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। এসময় খুঁটির কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া বিদ্যালয়ের জায়গায় ঐক্যতান ক্লাবের নামে একটি পাকাভবনও নির্মাণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: রাউজানে রাতের ভরা গোয়ালঘর ভোর হতেই খালি!

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সায়েমা জামাল বলেন, জমির নামজারির কাগজ পর্যবেক্ষণ করে বেদখলে থাকা জমি উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারের মাধ্যমে পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি পুতে দেওয়া হয়। কিন্তু ওইদিন রাতের আঁধারে খুঁটিগুলো তুলে ফেলা হয়। চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যরা এ কাজ করেছেন।

জানা যায়, ১৯০৫ সালে উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তর দলই নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেই সময় প্রয়াত প্রাণ কৃষ্ণ মহাজন নামে এক ব্যক্তি বিদ্যালয়ের জন্য ৫৮ শতক জমি দান করেন। পরে রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী আরও দুশতক জমি বিদ্যালয়ের নামে কিনে দেন। সবমিলিয়ে জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০ শতক।

কাগজে-কলমে ৬০ শতক জমি হলেও দখলে আছে মাত্র ৪০ শতক জমি। বাকি ২০ শতক দখলে রেখে ভোগদখল করছেন গহিরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বাঁশি ও তার আপন ভাই নুরুল আলমের পরিবার।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে গহিরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বাঁশি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ‘খুঁটিতে কি জায়গা চলে যাবে? আমাকে না জানিয়ে জমি পরিমাপ করা হয়েছে। স্কুলের জমি আমি, আমার ভাই কিংবা পরিবারের কোনো সদস্যের দখলে থাকলে অবশ্যই ছেড়ে দেব।’ খুঁটি উঠিয়ে ফেলার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল কুদ্দুস বলেন, রাউজানে উত্তর দলইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট জমির পরিমাণ ৬০ শতক। ওই জমির মধ্যে কিছু জমি স্কুলের দখলে নেই। রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশে বেদখলে থাকা জমি পরিমাপ করে খুঁটি দিয়ে দখল করে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, উত্তর দলই নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুটি ভবন, একটি ওয়াশ ব্লক আছে। স্কুলের শিক্ষার্থী ১৬১ জন এবং শিক্ষক রয়েছেন ৭ জন।

এসএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm