৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে `আয়নাঘর’ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। এবার চট্টগ্রামের রাউজানে `আয়নাঘরে’ মানুষকে জিম্মি করে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে সাবেক সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। খামার বাড়ি নামের সেই ‘আয়নাঘরে’ দুই সহোদরকে জিম্মি করে ছেলেদের নামে জমি লিখে নিয়েছেন ফজলে করিম চৌধুরী। এ অভিযোগে নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে রাউজান থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ এর বিচারক ফারজানা ইয়াসমিন শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন— সাবেক সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, তাঁর দুছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী ও ফারহান করিম চৌধুরী, নুরুল হক চৌধুরীর ছেলে জমির উদ্দিন পারভেজ ও জসিম উদ্দিন চৌধুরী, রফিক মিয়ার ছেলে মিজানুর রহমান মুন্সি, মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মো. লোকমান এবং নাছির। তারা সবাই পশ্চিম রাউজানের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতান আহমেদ বাড়ির বাসিন্দা। মামলায় পূর্ব রাউজান ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জরিপ আলী পেশকার বাড়ির মৃত জেবল হোসেনের ছেলে বেদারুল ইসলামসহ আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন : শারদীয় দুর্গোৎসব—রাউজানের ৮ স্পটে ব্যস্ততা
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মামলার বাদী ইসলাম মিয়া ও তাঁর ভাই আবুল হাশেমের সম্পত্তি ফজলে করিম চৌধুরীর ছেলেদের নামে করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় চাপ দিতে থাকেন। মামলার অন্য আসামিদের মাধ্যমে হুমকি-ধমকিও নিয়মিত চলছিল। তবে তাঁরা কেউ এ সম্পত্তি ফজলে করিমের ছেলেদের নামে লিখে দিতে রাজি নন। এজন্য বাদীর প্রবাসী ভাই আবুল হাশেমকেও চাপ দিয়ে দেশে নিয়ে আসেন আসামিরা। এরপরও কাজের কাজ কিছু হচ্ছিল না।
পরে মামলার অন্য আসামিরা ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল ইসলাম মিয়াকে নিজ ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় ফজলে করিমের খামার বাড়িতে। সেখানে তিনদিন আটকে রাখা হয় তাঁকে। একই সময় আবুল হাশেমের পাসপোর্ট জব্দ করে জমি লিখে দিতে চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু এতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের মারধর করা হয়। এ জমি ফজলে করিমের দুছেলের নামে লিখে না দিলে সপরিবারে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। পরে জোর করে রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে জমি ফজলে করিমের দুছেলের নামে লিখে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ইসলাম মিয়ার।
ইসলাম মিয়ার অভিযোগ, ২০১৯ সালের ১২ জুন অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ইসলাম মিয়া ও তাঁর প্রবাসী ভাই আবুল হাশেমকে রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যায় মামলার আসামিরা। এসময় তাদের কাছ থেকে টিপসই ও স্বাক্ষর নিয়ে তাদের পারিবারিক সম্পত্তি ফজলে করিমের দুছেলে ফারাজ ও ফারহানের নামে করে নেওয়া হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী মেজবাহ উল আলম এমিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, শুনানির পর মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে রাউজান থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আরএস/আরবি