রশিদ নিয়ে হাসিল দিতে চান শিকলবাহা ক্রসিংয়ের ব্যবসায়ীরা, ভাসমান বাজার না বসানোর ঘোষণা

সরকারি ইজারায় যদি বাজারের ডাক হয়, তবে নিয়মিতভাবে সরকারি কর (হাসিল) পরিশোধসহ মহাসড়কে ভাসমান বাজার না বসানোর কথা জানিয়েছেন কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ক্রসিং এলাকার ৮০ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ প্রায় ২০০ কর্মচারী।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেন তারা। এসময় ব্যবসায়ীরা শিকলবাহা ক্রসিং বাজারের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করাসহ প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতি ন্যায় বিচারেরও আহ্বান জানান।

মানববন্ধনে ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন ও বাঁচা মিয়া সওদাগর বলেন, শিকলবাহা ক্রসিং বাজার দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এখানে চলছে। এ বাজারের ওপর অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্ভরশীল। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির সুযোগ পান এখানে। বাজারটি বন্ধ হয়ে গেলে কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়বে। ক্রসিং বাজারের আশেপাশে দুকিলোমিটারের মধ্যে কোনো হাট-বাজার নেই। তাই বাজারটি চালু রাখার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।

ব্যবসায়ী সেকান্দর ও আলী আজগর অভিযোগ করেন, উপজেলা প্রশাসনের তহসিলদার অফিসের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে আমাদের কাছ থেকে দৈনিক ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত হাসিল আদায় করলেও কোনো রশিদ দিতেন না। তারা বলতেন, আদায় করা অর্থ ইউএনও বরাবর জমা দিচ্ছেন।

আরও পড়ুন : কালোবাজারির নিরাপদ জোন ‘শিকলবাহা’—৭ পয়েন্টে আসে জাহাজের চোরাই পণ্য

মানববন্ধনে বলা হয়, মহাসড়কে বাজার বসানোর ফলে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়। পথচারী ও যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি রাস্তা পারাপারে দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। কয়েকদিন আগে শিকলবাহা ক্রসিং এলাকায় একটি বাস ও পিকআপের সংঘর্ষে দুব্যক্তি নিহত এবং কয়েকজন আহত হন।

মানবন্ধনে উপস্থিত ছিলেন মহিউদ্দিন, বাঁচা মিয়া, আবুল হাসেম, সেকান্দর, আলী আজগর, রুবেল, নুর মিয়া, ফারুকসহ শতাধিক ব্যবসায়ী।

এদিকে সচেতন মহলের দাবি, বাজারটি ইজারাবিহীন। তাই যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশে কলেজ বাজার, ফকিরনিরহাট এবং শান্তিরহাট বাজার থাকার পরও কুচক্রি মহল সড়কে বাজার বসিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে।

মহাসড়ক আইন অনুযায়ী, মহাসড়কের ১০ মিটারের মধ্যে কোনো স্থায়ী বা অস্থায়ী অবকাঠামো তৈরি কিংবা ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি নেই। তবে স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ নিয়ম কার্যকর করতে দীর্ঘদিন ব্যর্থ হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ব্যবসায়ীদের মানববন্ধনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং বাজারটি স্থানান্তরিত করার সম্ভাব্য বিকল্প নিয়ে কাজ চলছে।

এ বিষয়ে জানতে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুমা জান্নাত ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজ রয়া ত্রিপুরার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা রিসিভ করেননি।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, মহাসড়কে বাজার বসানোর কোনো নিয়ম নেই। তাই বাজারটি উচ্ছেদ করা হয়েছে। ইজারা ছাড়া বাজার বসানো যাবে না। আমি বিষয়টি খোঁজ-খবর নিচ্ছি।

জেজে/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm