চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) রাতের আঁধারে হামলা চালায় শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলের অনুসারীরা। অতর্কিত সেই হামলায় রক্তাক্ত হন আ জম নাছির উদ্দিন অনুসারী দুই ছাত্রলীগ নেতা। এ হামলার ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (৩১ অক্টোবর) রাতে চকবাজার থানায় মামলাটি করেন শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান।
এর আগে শনিবার (৩০ অক্টোবার) রাতে নগরের পাঁচলাইশ থানায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিকুর রহমান।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম মেডিকেলে নাছির গ্রুপের অনুসারীদের মেরে রক্তাক্ত করল নওফেল গ্রুপ
এদিকে রোববার রাতের সেই মামলায় আসামি করা হয়েছে- চমেক ৬২তম এমবিবিএস ব্যাচের জাকির হোসেন সায়াল, মঈনুল ইসলাম, জুলফিকার মোহাম্মদ শোয়েব, মাহিন আহমেদ, ইমাম হাসান, মো. শরীফ, সৌরভ দেবনাথ, সাজু দাস ও আহমেদ সিয়াম, ৬১তম ব্যাচের ইমতিয়াজ আলম, মো. হাবিবুল্লাহ হাবিব, সাজেদুল ইসলাম হৃদয় ও মো. সাইফুল্লাহ, ৬০তম ব্যাচের অভিজিৎ দাস ও মো. ফাহাদুল ইসলাম এবং ৫৮তম ব্যাচের মো. তৌফিকুর রহমান ইয়ুনকে।
আসামিরা সবাই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, গত ২৯ অক্টোবর রাত ১১টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীরা চাপাতি, হকিস্টিক, কিরিচ নিয়ে রুমে প্রবেশ করে আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ওই হামলায় দুই ছাত্রলীগ নেতা গুরুতর আহত হন।
আহতরা হলেন- ৬১তম ব্যাচের মাহফুজুল হক এবং ৬২তম ব্যাচের নাইমুল ইসলাম। আহত দুজন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
যোগাযোগ করা হলে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফেরদৌস জাহান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় মাহমুদুল হাসান নামে এক শিক্ষার্থী থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাতে আধিপত্য বিস্তারককে কেন্দ্র করে চমেকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। আ জ ম নাছির গ্রুপের অনুসারীদের মেরে রক্তাক্ত করে নওফেল গ্রুপ। এতে আহত হন দুই ছাত্রলীগ নেতা।
আরও পড়ুন: হঠাৎ নিষিদ্ধ হলো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ‘রাজনীতি’—প্রত্যাহার চেয়ে ফেসবুকে মন্তব্য
এদিন রাত ২টার দিকে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলের অনুসারীরা আ জ ম নাছিরের অনুসারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
হামলায় আহত হন ছাত্রলীগ নেতা চমেকের ৬১ ব্যাচের মাহফুজুল হক (২৩) ও ৬২ ব্যাচের নাইমুল ইসলাম (২০)। তাঁরা দুজনই আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী।
এদিকে রাতের ঘটনার জের ধরে শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৯ টায় ফের উভয়পক্ষে আবারও সংঘর্ষ হয়। এসময় শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলের অনুসারীদের ধাওয়া খেয়ে চমেক প্রিন্সিপালের রুমে ঢুকে পড়ে আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা। দুপুর ১টা পর্যন্ত সেখানেই অবরুদ্ধ ছিলেন তারা। পরে পুলিশ পাহাড়ায় তারা সেখান থেকে বের হন।
ঘটনার পর অনিদিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেদিন সব শিক্ষার্থীকে বিকেল ৫টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিপাকে পড়েন হলে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আরবি