মিরসরাইয়ের আলোচিত হত্যাকাণ্ডে নিহত তিনজনের জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে অশ্রুজলে শেষ বিদায় জানান মো. মোস্তফা ওরফে মোস্তফা সওদাগর (৫৬), স্ত্রী জোসনা আরা (৪৫) ও মেজ ছেলে আহমেদ হোসেনকে (২৫)।
মিরসরাইয়ে এই প্রথমবারের মতো নৃশংস খুনের ঘটনায় একসঙ্গে একই পরিবারের তিনজনের জানাজা হলো।
শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ গ্রামে এসে পৌঁছে।
আরও পড়ুন : শহর থেকে ছুরি কিনে মিরসরাইয়ে গিয়ে বাবা—মা—ভাইকে হত্যা করে ঘরের বড় ছেলে
মোস্তফা সওদাগর ও তার ছেলে আহমদ হোসেন স্থানীয় দোকানদার ছিলেন। সেই সুবাদে এলাকার সবার সঙ্গে যেমন পরিচয় ছিল, তেমন ছিল সখ্যতাও। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্থানীয় গ্রামবাসী তাদের জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে সবার একটাই দাবি౼ ঘাতক সাদেক হোসেনের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয়।
জহিরুল হক নামের এক বাসিন্দা বলেন, এর আগে কখনো একসঙ্গে তিনজনের জানাজার নামাজ পড়িনি। আমাদের গ্রামেও একসঙ্গে তিনজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়নি। তাও আবার একই পরিবারের। সামান্য সম্পত্তির জন্য আপন ছেলের হাতে বাবা-মা আর ভাইকে জবাই করে নৃশংসভাবে খুন ইতিহাসে বিরল। আমরা ঘাতক সাদেকের ফাঁসি চাই।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টায় উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের মোস্তফা সওদাগরের বাড়িতে মো. মোস্তফা মিয়া (৫৬), তার স্ত্রী জোসনা আরা (৪৫) এবং তাদের ছেলে আহম্মদ হোসেনকে (২৫) জবাই করে হত্যা করে বড় ছেলে সাদেক হোসেন। বসতবাড়িতে ১২ শতক জমির ৪ শতক মেজ ভাই আহমদ হোসেনকে রেজিস্ট্রি দেওয়ায় বাবা মোস্তফা ও মা জোসনা আরার সঙ্গে ঝগড়া হয় সাদেক হোসেনের। এছাড়া তার স্ত্রীকে নির্যাতন করা নিয়ে বাবা-মা আর ভাইয়ের প্রতি ক্ষোভ ছিল সাদেকের। তাই সে এমন নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটায়। সাদেক হোসেনকে আসামি করে জোরারগঞ্জ থানায় মামলা করেন ছোট বোন বিবি জুলেখা।
হত্যা মামলায় সাদেক হোসেনকে আদালতে পাঠানোর পর শুক্রবার সন্ধ্যায় সে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।