নিকট আত্মীয়ের পরিচিত হিসেবে এক বাসায় সাবলেট উঠেন পুলিশ সদস্য তারিকুল ইসলাম রাজিব (৩০)। ওই বাসায় স্বামী-সন্তানসহ বসবাস করতেন এক নারী। একপর্যায়ে ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন রাজিব। প্রতিশ্রুতি দেন, ওসি হলে তাকে রাণীর মতো রাখবেন।
তবে এ প্রতিশ্রুতি স্রেফ ওই নারীর ফাঁদে ফেলার জন্য দেওয়া। এমন প্রতিশ্রুতির ফাঁদে ফেলেই একাধিকবার সেই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন রাজীব। পরে তাঁর কুমতলব বুঝতে পেরে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন ওই নারী। কিন্তু পুলিশ সদস্য রাজিব যে নাছোড়বান্দা! সম্পর্কের এমন পরিণতি হবে জেনেই, সে গোপনে করে রেখেছিলেন ভিডিও। অনলাইনে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি এবার চলে ব্ল্যাকমেল।
এমন পরিস্থিতিতে আদালতের শরণাপন্ন হলেন ভুক্তভোগী সেই নারী। গত মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য তারিকুল ইসলাম রাজিব ও তাঁর এক বন্ধুর নামে মহানগর সাইবার ট্রাইব্যুনালে করলেন মামলা।
মামলার আসামিরা হলেন- নতুন আদালত ভবনের মালখানায় কর্মরত পুলিশ সদস্য পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানার রানিপুর ইউনিয়নের আবুল হোসেনের ছেলে তারিকুল ইসলাম রাজিব (৩০) ও তাঁর বন্ধু সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী জাহিদ সিরাজ মিয়া (৩০)।
এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুানাল মামলা করেছিলেন ভুক্তভোগী নারী। গত ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়েছিল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারীর নিকট আত্মীয়ের পরিচিত পুলিশ সদস্য তারিকুল ইসলাম রাজিব পুটয়াখালী জেলার বাসিন্দা হওয়ায় তাকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার কিশোয়ান গলির নুর ম্যানশনে সাবলেট হিসেবে ভাড়া দেন। একই বাসায় থাকার সুবাদে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়।
এদিকে পুলিশ সদস্য তারিকুল নতুন আদালত ভবনের মালখানায় কর্মরত হওয়ায় সেখান থেকে জব্দ থাকা ইয়াবা এনে বন্ধুদের সঙ্গে সেবন শুরু করেন বাসায় বসে। তা দেখে ভুক্তভোগী নারী বাধা দেন। এছাড়া তার কুমতলব বুঝতে পেরে শারীরিক সম্পর্কে অনীহা দেখান। এতে রাজিব ক্ষিপ্ত হয়ে তার দুবাই প্রবাসী বন্ধু জাহিদ সিরাজ মিয়া মিলে গোপনে করে রাখা বিভিন্ন ভিডিও ভাইরালের হুমকি দিতে থাকেন।
এরপর তিনি বায়েজিদ থানায় তারিকুল ইসলাম রাজিব ও তার বন্ধুর বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে সেখান থেকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর তিনি গত ১৮ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।
মামলার পর রাজিব ও তার বন্ধু বেপরোয়া হয়ে উঠে। তারা দুবন্ধু মিলে ভুক্তভোগী নারীর মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে নানা ধরনের অশ্লীল বার্তা ও হুমকি দিতে থাকেন। পরে ভুক্তভোগী নারী সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী নারী বলেন, পুলিশ সদস্য রাজিব আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করেছেন। আমি মামলা করলে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হুমকি দেওয়া শুরু করে। আমি নিরুপায় হয়ে আবারও মামলা করেছি। বর্তমানে মোবাইলে আমাকে নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমি পরিবার নিয়ে এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
সিএম/আরবি


