মামলার জালে স্যানমার—৬ তলার ভবন হয়ে গেল ১১ তলা!

নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণ করায় মামলা জুটেছে স্যানমার প্রপার্টিজ লিমিটেডের কপালে। স্থানীয় এক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন।

গত ৮ জুন নির্মাণাধীন ভবনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর পক্ষে সিডিএ (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করেন ওই ব্যক্তি। মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের প্ল্যান অনুমোদনের ডকুমেন্টসসহ আদালতে হাজির হওয়ার সমন দেন বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী।

মামলার বিবাদীরা হলেন— স্যানমার প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম মাসুক হক, প্রজেক্ট ম্যানেজার সেলিম বিন সালেহ, প্রজেক্ট ডিরেক্টর সফিকুর রহমান ও ম্যানেজার (এডমিন) মো. মাইনুল হক।

জানা গেছে, পাহাড়ঘেরা উত্তর খুলশী এলাকায় মাটি পরীক্ষা করে সিডিএ ৬তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়। কিন্তু ইম্পেরিয়াল হিলের ১০৯/সি নং প্লটের ৪ নম্বর রোডের জায়গাটিতে ১২ তলা ভবন নির্মাণের কাজ করছে আবাসন প্রতিষ্ঠান স্যানমার প্রপার্টিজ লিমিটেড। বর্তমানে ভবনটির ১১ তলার কাজ চলছে।

এছাড়া সানমার গ্রানডি নামের ভবনটিতে যাতায়াতের রাস্তা রয়েছে ১০-১২ ফুট। অগ্নিকাণ্ড কিংবা বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভবনটিতে উদ্ধার তৎপরতা চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ অনুযায়ী ভবনটির উত্তর পাশে তিন মিটার দূরত্বের বদলে প্রতিষ্ঠানটি রেখেছে মাত্র পৌনে এক মিটার। একইভাবে দক্ষিণ পাশে তিন মিটারের পরিবর্তে এক মিটার, পূর্ব দিকে দেড় মিটারের পরিবর্তে এক মিটার এবং পশ্চিম পাশে তিন মিটারের পরিবর্তে দূরত্ব রাখা হয়েছে মাত্র দেড় মিটার। ইতোমধ্যে ভবনটির ১০ তলার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর নগরের উত্তর খুলশীর স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহাবুদ্দীন আলম, মো. জাকারিয়া, মো. গোলাম মোস্তফা, প্রফেসর আব্দুল ওয়াহেদ, ডা. একেএম সাদিক হোসেন, মো. আলাউদ্দিন, মো. মঈনউদ্দীন, সৈয়দ রহমত এলাহীসহ ১১ ব্যক্তি সিডিএতে অভিযোগ দেন। অভিযোগ দায়ের করার পরও সিডিএ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এছাড়া গত ২৯ এপ্রিল পাহাড়ধসের আশঙ্কায় নগরের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সৈয়দ রাফিদুল আলম নামের এক ব্যক্তি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার বরাত দিয়ে অ্যাডভোকেট মো. ইয়াসিন আরফাত সাজ্জাদ বলেন, ৬ তলা প্ল্যান নিয়ে স্যানমার সামনের দিকে ৬ তলা করলেও পেছনের দিকে ১২ তলা নির্মাণ করেছে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী তারা চারপাশে ১০ ফুট ছাড়েনি। প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ফুট পাহাড় কেটে উত্তর খুলশীতে ভবনটি নির্মাণ করছে স্যানমার। এতে ইমারত নির্মাণ আইন ১৯৫২ এর ১২ ধারা এবং সিডিএ আইন ২০১৮ এর ৪৪ ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে স্যানমার প্রপার্টিজ লিমিটেডের হেড অব অপারেশন এহেসানুল বারীকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!