কয়েক দফা ‘কঠোর’ বিধিনিষেধেও দেশে কমেনি করোনা শনাক্তের সংখ্যা। এ অবস্থায় জীবিকার বিষয়টিও ভাবতে হচ্ছে সরকারকে। আবার হঠাৎ সব খুলে দিলে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে ১১ আগস্ট দেশে ‘কঠোরতা’ উঠলেও, বেশকিছু বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে ছাড় মিলতে পারে ধাপে ধাপে।
সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায় থেকেও এসেছে তেমন বার্তা। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলছেন, চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে ‘ধাপে ধাপে’।
আরও পড়ুন: হঠাৎ আলোচনায় ‘মিশ্র বিধিনিষেধ’
সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে রোববার (৮ আগস্ট) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত সভায় যেটা আলোচনা হয়েছে সেখানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী সভাপতিত্ব করেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত ছিল বিধিনিষেধ ১০ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা। ১১ তারিখ থেকে ধাপে ধাপে শিথিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, যদিও শনাক্তের হার কমছে, কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা দুশ’র ওপরে আছে। সে বিষয়ে অবশ্যই আমাদের নজর রাখতে হচ্ছে। আগামীতে কী পর্যায়ে শিথিল করব সে বিষয়ে আজ (রোববার) প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত পাব। সেটা আজ বা কাল জানাতে পারব।
মানুষের জীবিকার বিষয়ে সরকারের চিন্তা-ভাবনার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে ও নিম্নআয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে বিধিনিষেধ ধাপে ধাপে শিথিল করা হবে। সেটা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত পেলে জানা যাবে।
আরও পড়ুন: করোনা—চট্টগ্রামে ফের বাড়ল মৃত্যু, এবার বেশি নগরে
বিধিনিষেধ শিথিলের প্রজ্ঞাপন প্রসঙ্গে ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর আজ বা কাল সকালে হয়ত প্রজ্ঞাপন দিতে পারব। কতটুকু শিথিল, তা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পর জানাতে পারব। আমাদের পরামর্শ ধাপে ধাপে। কোনটি কখন খোলা হবে, কতটুকু পরিসরে খোলা হবে সেটা দেখতে হবে। কঠোরভাবে যাতে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন হয় সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা থাকবে।
টিকা কার্যক্রমের অগ্রাধিকারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যেহেতু দোকানপাট খুলতে হবে- সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মানে সেদিকে আমাদের জোর থাকবে। গতকাল থেকে গণটিকা চালু করেছি, এটি ১২ আগস্ট পর্যন্ত চলমান থাকবে। আমরা চাইব সবাই যেন মাস্ক পরে। আমরা টিকা কার্যক্রমের মধ্যে যাদের বাইরে যেতে হয়, যেমন দোকানদার, ইমাম-মুয়াজ্জিন, চালক-সহকারীদের প্রায়োরিটি দিয়েছি। যাদের বাইরে আসতে হয় মানুষের সঙ্গে মিশতে হয় তাদের প্রায়োরিটি দিচ্ছি। ধাপে ধাপে ধীরে ধীরে সীমিত পরিসরে বিধিনিষেধ শিথিল করার চিন্তা আছে।
পাড়া-মহল্লার করোনা প্রতিরোধ কমিটিগুলোকে আরও কার্যকর করে মানুষ যেন মাস্ক পরে, জনসমাগম এড়িয়ে চলে সেটা দেখতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন কমিটি এটি নিয়ে কাজ করছে। আগামীতে মাস্ক পরা নিশ্চিতে তারা কাজ করবেন– যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘ছাড়’—১১ আগস্ট থেকে ‘বিধিনিষেধ’ থাকবে যেভাবে
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছরের ২৩ জুলাই থেকে দেশে ‘কঠোর’ বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে। ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও পরে বিধিনিষেধের সময়সীমা আরও পাঁচদিন (১০ আগস্ট পর্যন্ত) বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এরআগে গত ৩ আগস্ট জানানো হয়, ১১ আগস্ট থেকে দেশে চলমান বিধিনিষেধে কিছু পরিবর্তন আসছে। ওইদিন থেকে অফিস, গণপরিবহন ও মার্কেট খুলবে, তবে সীমিত পরিসরে। এছাড়া আগের ঘোষণা অনুযায়ী, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।