২০ বছর পর বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী জামালউদ্দিন অপহরণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাঞ্চননগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ নারগিস আক্তারের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন ‘কাশেম চেয়ারম্যান’।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফরিদ আহমেদ বলেন, জামালউদ্দিন অপহরণ মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে এই আদালতে। কাশেম চেয়ারম্যানের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ মামলায় মোট চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সমন দেওয়ার পরও বাদী হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ এগোচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এর আগে হাইকোর্টে আগাম জামিনের জন্য গিয়েছিলেন কাশেম চেয়ারম্যান। মামলা বিচারাধীন থাকায় আদালত জামিন না দিয়ে তাঁকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। তবে মামলার ১৪ আসামির মধ্যে মো. আলমগীর ছাড়া সবাই জামিনে আছেন।
আরও পড়ুন: চুরির ৫৭০ বস্তা খাদ্য মিলল ফটিকছড়ি বিএনপি নেতার বাড়িতে, ধামাচাপা দিতে জোর তদবির
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১৩ জুলাই নগরের চকবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চান্দগাঁওয়ে নিজ বাসায় ফেরার পথে জামালউদ্দিন অপহৃত হন। এসময় এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরিবারের পক্ষ থেকে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দেওয়া হলেও মুক্তি পাননি জামালউদ্দিন।
জামাল উদ্দিনের পরিবারের দাবি ছিল, সংসদ নির্বাচনে আনোয়ারা থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বীর নির্দেশে জামালউদ্দিনকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জামালউদ্দিনের ছেলে চৌধুরী ফরমান রেজা লিটন বাদী হয়ে নগরের চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর ‘কাশেম চেয়ারম্যান’ বিদেশে পালিয়ে যান। কয়েক মাস আগে দেশে ফিরে হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন চান তিনি।
অন্যদিকে ২০০৫ সালের ২৪ আগস্ট র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন মামলার আসামি কালা মাহবুব। এসময় ফটিকছড়ির কাঞ্চননগর এলাকার গহীন পাহাড়ে জামালউদ্দিনের কঙ্কাল দেখিয়ে দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। সেই কঙ্কাল উদ্ধার করে সিঙ্গাপুরে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় জামালউদ্দিনের লাশের।
এরপর ২০০৬ সালের ২০ জুলাই সিআইডি ১৬ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। পুনর্তদন্তেও ফের ওই ১৬ জনকেই আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।
পরে ২০১৮ সালে ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক। এর আগে মামলার দুই আসামি মারা যায়।