ভোরের আলো ফুটতে ফুটতে সৈকতজুড়ে সনাতন নর-নারীর ঢল। সমুদ্রে স্নান করে পূণ্য লাভের আশায় এসব পুণ্যার্থী জড়ো হয়েছেন সৈকতে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সেই ভিড়। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আসা ঋষি, মহারাজ, বৈষ্ণব, সাধু-সন্ন্যাসীরাও যোগ দেন উৎসবে।
স্নান করতে এসে ভক্তরা দেহ-মনকে পরিশুদ্ধ করতে পূজাঅর্চনা করেন। এরপর স্নানমন্ত্র পাঠ করে হাতে বেল পাতা, ফুল, ধান, দূর্বা, হরিতকী, কাঁচা আম, ডাব, কলা ইত্যাদি অর্পণের মাধ্যমে পুন্যস্নান সম্পন্ন করেন।
আরও পড়ুন: নতুন সাজে সীতাকুণ্ড—সোমবার শুরু লাখো পুণ্যার্থীর শিবচতুর্দশী মেলা
বুধবার (৩০ মার্চ) এ উপলক্ষে উত্তর পতেঙ্গার গঙ্গা ঘাটে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। মহাবারুণী ও গঙ্গাঁস্নানঘাট কমিটি এ আয়োজন করে। দিনব্যাপী আয়োজনের মধ্যে ছিল গঙ্গাপূজা, শ্রীমদ্ভগবত গীতাপাঠ, আলোচনা সভা ও মহাপ্রসাদ বিতরণ।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা রমনা কালি মন্দির ও জাগো হিন্দু পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা মিলন শর্মা, পঞ্চমাতা বিগ্রহ বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ শ্রীমৎ প্রেমময়ানন্দ ব্রহ্মচারী, দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিন পরিচালক দীপ্ত দাশ ও সমাজসেবক সুবীর চৌধুরী।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উত্তর পতেঙ্গা জেলেপাড়া মহাবারুণী ও গঙ্গাস্নান ঘাট কমিটির সভাপতি সোনা বাবু জলদাশ, সহসভাপতি পান্না জলদাশ, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দাশ, কাঞ্চন জলদাশ, কিরন জলদাশ, পরিমল জলদাশ ও সুব্রত জলদাশ।
আরও পড়ুন: নতুন সাজে সীতাকুণ্ড—সোমবার শুরু লাখো পুণ্যার্থীর শিবচতুর্দশী মেলা
স্কন্দ পুরাণ মতে, চৈত্রমাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে শতভিষা নক্ষত্র যোগ হলে সেই তিথি বারুণী নামে পরিচিত। এই তিথিতে স্নান করলে বহুশত সূর্যগ্রহণের জন্য গঙ্গাস্নানের যে ফল সেই ফল লাভ করা যায়। হিমালয়কন্যা গঙ্গার অপর নাম বারুণী। বারুণী স্নান এখানে গঙ্গা স্নানেরই প্রতিরূপ। বাংলা সনের প্রতি চৈত্র মাসের শতভিষা নক্ষত্রযুক্ত মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে এই স্নান অনুষ্ঠিত হয়।
শাস্ত্রমতে কোনো বছর যদি ওইদিনটি শনিবার হয় তবে সেই বারুণী স্নান অসাধারণত্ব লাভ করে মহাবারুণী স্নান রুপ লাভ করে। এই স্নানটি হিন্দু ধর্মীয় একটি পূণ্যস্নান উৎসব। জীব জগতের পঙ্কের মধ্যে পথ চলতে গিয়ে পাপাচারে পূর্ণ, ক্লেদাক্ত মুনস্যকূল এই পূণ্য স্নানের মাধ্যমে পাপমুক্ত হয়।
আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম