বাড়ি নয় যেন ‘মিনি ক্যান্টেনমেন্ট’, যেখানে অভিযান চালানোর সাহস করেনি পুলিশও

রাউজানের নোয়াপাড়ার একটি বাড়ি। এটি যেন বাড়ি নয়, মিনি ক্যান্টেনমেন্ট! এই বাড়িটিতেই লুকিয়ে রাখা হয়েছিল বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ। সেই বাড়িটিতেই অবশেষে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব। এ সময় অন্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি সন্ত্রাসী কামাল বাহিনীর প্রধান কামাল উদ্দিন (৪৯) ও তার সহযোগী সোহেল আহম্মদকে আটক করা হয়।

নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নোয়াপাড়া পথের হাটের দক্ষিণ পাশে সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম খায়েজ আহম্মদের বাড়িতে এ অভিযান চালায় র‌্যাব-৭। বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাত ১টা থেকে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বেলা ১২টা পর্যন্ত ডগ ষ্কোয়াডের মাধ্যমে এ অভিযান চালায় র‌্যাব।

অভিযানে সাবেক চেয়ারম্যান খায়েজ আহম্মদের ছেলে সন্ত্রাসী কামাল উদ্দিনকে আটক করে র‌্যাব। কামাল বাহিনীর প্রধান কামাল উদ্দিনের দেওয়া তথ্যে তার ঘর থেকে ১১টি অত্যাধুনিক আগোয়াস্ত্র, রাম দা, কিরিচ ও বিদেশী মদের বোতল উদ্ধার করা হয়। পরে কামালের সহযোগী সোহেলকে আটক করে র‌্যাব। সোহেল একই এলাকার মৃত শফিক আহম্মদের ছেলে।

বেলা সাড়ে ১২টায় উদ্ধার করা অস্ত্রসহ আটক সন্ত্রাসী কামাল ও সোহেলের উপস্থিতকে সংবাদ সম্মেলন করেন র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, রাউজানে গত ১৪ মাসে ১৭ খুনের ঘটনার পর র‌্যাব নজরদারি বাড়িয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আটক সন্ত্রাসীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ১১টি একনলা বন্দুক, ৩টি চাইনিজ কুড়াল, ১০টি চাপাতি, ৮টি রাম দা, ১৫ টি কার্তুজ, ৯টি হকিস্টিক, ৬টি ছুরি ৩টি হাতুড়ি ও ৩টি করাত। এছাড়া দুই বক্স ফটকাবাজি ও এক বোতল মদও করা হয়।

জানা যায়, সন্ত্রাসী কামাল বাহিনীর প্রধান কামাল উদ্দিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সন্ত্রাসী কামাল সহয়োগীদের নিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলে। এর পর সংঘটিত করতে থাকে একের পর এক অপরাধ।

চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি দিনদুপুরে সন্ত্রাসী কামালের বাড়ির অদুরে জুমার নামাজ আদায় করার জন্য যাওয়ার পথে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে গুলি করে খুন করা হয়। ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম খুনে জড়িতরা ছিল মুখোশ ও হেলমেট পরা।

স্থানীয়রা বলছে, চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসী কামাল উদ্দিন ও তার অনুসারীরা জাহাঙ্গীর আলমকে খুন করেছে। নোয়াপাড়া পথের হাটের বেশ কয়েজন ব্যবসায়ী কামাল বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে উদ্ধার করা অস্ত্র রাউজান থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করেছে র‌্যাব। একইসঙ্গে র‌্যাব বাদী হয়ে রাউজান থানায় মামলা করেছে।

সূত্র বলছে আটক কামালের বিরুদ্ধে রাউজান থানায় তিনটি মারামারির মামলা রয়েছে। নোয়াপাড়া পথের হাটের পাশে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের পাশে সন্ত্রাসী কামাল নিজ বাড়িতে অস্ত্রের কারখানা গড়ে তুললেও কোনো সময়ে সেখানে অভিযান চালানোর সাহস করেনি পুলিশ।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm