বদলায়নি কিশোর গ্যাং লিডার ইমরানের সাম্রাজ্য, চাঁদাবাজি—জমি দখল চলছেই

দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি কিশোর গ্যাং লিডার ইমরান চৌধুরীর সাম্রাজ্যের। ৫ আগস্টের পরও হত্যাচেষ্টা, জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ একের পর এক অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান। এসব অভিযোগে হয়েছে একাধিক মামলাও। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির জোরে এখনো অধরাই রয়েছে এই কিশোর গ্যাং লিডার।

সংবাদ সম্মেলনের ইমরান চৌধুরীর বিরুদ্ধে এভাবেই অভিযোগ তুলে ধরেন মনিরুল ইসলাম আজাদ নামে এক ভুক্তভোগী। চাঁদাবাজি, হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে সোমবার বিকেলে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইমরান চৌধুরী চট্টগ্রামের হালিশহর থানার মধ্যম রামপুর চৌধুরী বাড়ির মৃত জহির সওদাগরের ছেলে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শাসনামলে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, হামলাসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন তিনি। এলাকায় কিশোর গ্যাং গড়ে তুলে মাদকসহ বিভিন্ন অবৈধ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করেন ইমরান। এর আগে কিশোর গ্যাংবিরোধী র‌্যাবের অভিযানে আটকও হয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু বেরিয়ে এসে ফের চালিয়ে যান অপকর্ম। একাধিক মামলার আসামি হয়েও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে ইমরান। নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছেন একের পর এক অপকর্ম।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ৫ আগস্টের পর দেশ স্বৈরচারমুক্ত হওয়ার কথা, কিন্তু ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী কিশোর গ্যাং লিডার ইমরান অদৃশ্য ক্ষমতার দাপটে এখনো এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যু কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন স্থানীয় নিরীহ মানুষ।

আরও পড়ুন : সুন্দরী নারীর ফাঁদ—ভিআইপি সিক্রেট গ্রুপ

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম আজাদ জানান, কিশোর গ্যাং লিডার ইমরানের বাড়ির পাশেই তাঁর জমি রয়েছে। সেই জমিতে নির্মাণকাজের পরিকল্পনার লক্ষ্যে ১৩ নভেম্বর রামপুর এলাকার সেই জমিতে যান আজাদ। এ সময় ইমরান চৌধুরী এবং তাঁর দুই সহযোগী রাজু ও আরিফ এসে বলেন, জমিতে নির্মাণকাজ করতে চাইলে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। অন্যথায় নির্মাণকাজ করতে দেওয়া হবে না।

মনিরুল আরো জানান, পরদিন ১৪ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে তিনি আবারো নিজের জমিতে গেলে ইমরান ও তার সহযোগীরা তাকে চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এসময় তারা ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আজাদ চাঁদা দিবে না জানালে ইমরান ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে লোহার রড ও হকিস্টিক দিয়ে আজাদের ওপর হামলা চালান।

হামলায় আজাদের হাতের আঙুল ভেঙে যায়, শরীরে মারাত্মক জখম হয়। এখনও ইমরান ক্রমাগত হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে এর থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানান আজাদ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, কেবল সাধারণ মানুষের জমি নয়, এলাকায় মসজিদের জমিও দখল করেছেন ইমরান। মসজিদের জায়গায় দোকান নির্মাণসহ ইট-বালি রেখে জোর করে দখলে রেখেছেন মসজিদের জমি। ফাতেমা নার্গিছ লাকী নামে এক নারীর জমিও দখলের প্রচেষ্টা চালান ইমরান। এছাড়া জমি কিনে দেওয়ার নামে মাহামুদ নামে এক ব্যক্তি থেকে আত্মসাৎ করেন ১৫ লাখ টাকা। এর আগে টাকা মেরে দেওয়ার অভিযোগে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিচ্যুতও হয়েছিলেন কিশোর গ্যাং লিডার ইমরান চৌধুরী।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm