ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মাসের নিষেধাজ্ঞায় সেন্টমার্টিন, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত 

নীল জলরাশি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু সেন্টমার্টিন। তবে এবার ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য রয়েছে দুঃসংবাদ। আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯ মাস সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার।  পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

সিদ্ধান্ত মতে, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক ভ্রমণের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মাস (ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর) দ্বীপটিতে যেতে পারবে না কোনো পর্যটক।

এদিকে দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভ্রমণের সময় বাড়ানোর দাবি জানালেও এখন পর্যন্ত সরকারি সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

আরও পড়ুন : সেন্টমার্টিনে গভীর রাতের আগুনে চোখের পলকেই পুড়ে ছাই ২ রিসোর্ট

অন্যদিকে, চলতি বছর পরিবেশ রক্ষা ও পর্যটক সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বেশকিছু বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নভেম্বরে পর্যটকরা যেতে পারলেও রাত্রিযাপন ছিল নিষিদ্ধ।

এছাড়া যথাসময়ে জাহাজ চলাচলের অনুমতি না পাওয়ায় একই মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে যেতে পারেননি। তবে প্রতিবছর ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পর্যটকরা দ্বীপে ভ্রমণ করে থাকেন। গত ১ ডিসেম্বর থেকে ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে পর্যটকদের দ্বীপে ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হয়।

তথ্য মতে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে  প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ হাজার পর্যটক ভ্রমণের অনুমতি পান এবং  রাত্রিযাপন করতে পারেন। তবে আসছে ফেব্রুয়ারিতে পর্যটন পুরোপুরি নিষিদ্ধ থাকবে।

সংশ্লিষ্ট বলছেন, সেন্টমার্টিনের অর্থনীতি মূলত পর্যটননির্ভর। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, নৌপরিবহনসহ হাজার হাজার মানুষ পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। পর্যটন মৌসুম কমে যাওয়ায় তারা সবাই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন।

জানা যায়, ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটিতে বসবাস করেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, দুমাসের আয় দিয়ে সেন্টমার্টিনের মানুষ সারাবছর চলতে পারবে না। অন্তত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যটনের সুযোগ দিতে হবে।

হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি এমএ রহিম জিহাদী বলেন, অতীতে এ ধরনের সংকট হয়নি। পর্যটন বন্ধ হলে দ্বীপের বাসিন্দারা বড় সংকটে পড়বে।

সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, অন্তত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য দ্বীপ উন্মুক্ত রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। এতে ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

এদিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারি নির্দেশনা ছাড়া পর্যটন সময় বাড়ানো সম্ভব নয়।

যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সেন্টমার্টিনগামী জাহাজগুলো চলাচল করতে পারবে। এরপর আর পর্যটকবাহী জাহাজগুলো চলাচল করতে দেওয়া হবে না। যদি সরকার সময় বর্ধিতকরণের কোনো নির্দেশনা দেয় সেক্ষেত্রে নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেজে/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm