প্রচারণায় সরগরম আনোয়ারা—৬ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ঘরের শত্রু বিভীষণ

আনোয়ারায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনি প্রচারণায় সরগরম উপজেলার ১০ ইউনিয়ন। প্রার্থীরা পোস্টার ছাপিয়ে, ব্যানার টাঙিয়ে শুরু করে দিয়েছেন প্রচারণা।

এদিকে চারটি ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। তবে বাকি ৬ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ঘরের শত্রু বিভীষণ! দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি এসব ইউনিয়নে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরাও।

ইতোমধ্যে ৪ ইউনিয়নে একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন নৌকার প্রার্থী। এর মধ্যে বৈরাগ ইউনিয়নে নোয়াব আলী, বটতলীতে অধ্যাপক এমএ মান্নান চৌধুরী, বারখাইনে হাসনাইন জলিল শাকিল এবং চাতরীতে আফতাব উদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: কর্ণফুলীতে ইউপি নির্বাচন—দুটিতে নৌকা, একটিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর বিশাল জয়

এদিকে বাকি ৬ ইউনিয়নে বিদ্রোহের অনলে পুড়ছে আওয়ামী লীগ। ২ নম্বর বারশত ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী, বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ কাইয়ূম শাহের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমিনুল হক।

৩ নম্বর রায়পুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান জানে আলামের সঙ্গে রায়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আমিন শরীফ ও আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল কাদের প্রার্থী হয়েছেন।

৫ নম্বর বরুমচড়া ইউনিয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল ইসলাম চৌধুরীরে সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বশর।

৭ নম্বর আনোয়ারা সদর ইউনিয়নে অসীম কুমার দেবরে সঙ্গে লড়বেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দিদারুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম।

৯ নম্বর পরৈকোড়া ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফ চৌধুরীরে সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নাজিম উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসান জিয়াউল ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আবদুল হক।

আরও পড়ুন: চকরিয়ায় ইউপি নির্বাচন : শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা

১০ নম্বর হাইলধর ইউনিয়নে উপজেলা আওযামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. সোলেমান এবং আবু তাহের।

বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায় বড় আলোচনা এখন ব্যক্তি ইমেজ নিয়ে। চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনে নতুনের চেয়ে পুরাতনদের ওপর বেশি ভরসা রাখছেন নতুন প্রজন্মের ভোটাররা।

বারশত ইউনিয়নের ভোটার এমরান বলেন, চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য পদে নতুনের চেয়ে এগিয়ে আছেন পুরাতনরা। চাতরী ইউনিয়নে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য প্রার্থী মো. আবুল কালাম বলেন, সাধারণ মানুষের সমর্থন পাচ্ছি। আশা করছি নতুন প্রজন্মের ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবে না।

বারশতের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ কাইয়ূম শাহ বলেন, গতবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এলাকায় উন্নয়নকাজ করেছি। এবারও ভোটাররা উন্নয়নের কথা চিন্তা করে নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। আমি নির্বাচিত হলে বারশতকে একটি জবাবদিহিতামূলক আধুনিক মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর করবো।ি

আরও পড়ুন: ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে আনোয়ারা রণক্ষেত্র, নির্বাচনি সংঘর্ষে রক্তাক্ত ১১

এদিকে কোনো প্রার্থী যাতে আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে না পারেন সেদিকে নজরদারি রাখা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) উপজেলার চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে প্রার্থীদের নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে আনোয়ারার ১০ ইউনিয়নে ব্যালেট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে।

ইমরান/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!