পার্কভিউ হাসপাতাল—আইসিইউ বেডেই ‘সাহসী’ অপারেশনের ‘যুদ্ধজয়’

প্রায় ১১ দিনের জ্বর আর ৫ দিনের শ্বাসকষ্ট নিয়ে ১ আগস্ট নগরের পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি হন ফেনীর মো. একরামুল হক (৫৩)।

২ আগস্ট একরামুল হকের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়। তবে তার শ্বাসকষ্টের চেয়েও বেশি ছিল পেটব্যথা, যার কারণ বোঝা যাচ্ছিল না। সিটি স্ক্যানসহ সম্ভাব্য সব পরীক্ষাই করা হয়। করোনার কারণে অ্যান্ডোসকপিটাই শুধু বাদ ছিল। এতকিছুর পরও পেটব্যথার কারণ জানা যাচ্ছিল না।

এদিকে ধীরে ধীরে রোগীর অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকায় ২ আগস্ট সন্ধ্যায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আইসিইউতে থাকা অবস্থাতেই রোগীর ব্লাড প্রেসার কমতে থাকে। অক্সিজেন স্যাচুরেশন নেমে আসে ৭৪ থেকে ৭৮ শতাংশে। সিপ্যাপ সাপোর্টে তাকে দেওয়া হচ্ছিল অক্সিজেন।

৩ আগস্ট। হাতে আসে আরও কয়েকটি রিপোর্ট। রোগীর কিডনি এবং হার্টও ঠিকভাবে কাজ করছিল না। বোঝা যাচ্ছিল, মূল সমস্যা পেটে। কিন্তু পরীক্ষায় তেমন কিছু ধরা পড়ছিল না।

এ অবস্থায় এগিয়ে এলেন হাসপাতালটির সার্জন ও ইউরোলজিস্ট ডা. আলমগীর ভূঁইয়া। রোগী একরামুল হক সম্পর্কে তার আপন ভগ্নিপতি।

আইসিইউতে তখন রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন। তাই ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও অপারেশন করতে নেমে গেলেন ডা. আলমগীর ভূঁইয়া। ঠিক হলো অপারেশন আইসিইউতেই হবে।

শুরু হলো ২ ঘণ্টার ‘অপারেশন যুদ্ধ’। রোগীর পেট কেটে দেখা গেল তাঁর অর্ধেক ইনটেসটাইন (নাড়িভুঁড়ি) পঁচে গেছে। ডা. আলমগীর পঁচা অংশ আলাদা করে ফেলে দিলেন।

এরমধ্য দিয়ে অপারেশন থিয়েটার ও ভেন্টিলেটর ছাড়াই পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউ বেডে হলো সফল এক অপারেশন।

রোগী এখনও অক্সিজেন সাপোর্টেই আছেন, তবে অপারেশনের মাত্র ১ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর অক্সিজেন স্যাচুরেশন বেড়ে ৯৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

এ ব্যাপারে ডা. আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, একটি কঠিন মুহূর্তে ঝুঁকি নিয়ে সফল অপারেশন করেছি। মূলত রোগী আমার আপন ভগ্নিপতি হওয়ায় ঝুঁকি নিতে সাহস করি। বর্তমানে রোগীর অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। বাকিটা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পার্কভিউসহ ৩ হাসপাতাল পেল এন্টিজেন টেস্টের অনুমতি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!