চট্টগ্রাম নগরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ‘গ্রাম’ অটোরিকশা। শক্তিশালী এক চক্রের ‘টোকেন বাণিজ্যে’ নগরের রাস্তায় চলছে গ্রাম অটোরিকশা। অবৈধ এই টোকেন বাণিজ্যের মাধ্যমে চক্রটি প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এই টাকার ভাগ যায় স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে ট্রাফিক ও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে।
সূত্র জানায়, ওই চক্রের মূল হোতা দুজন। একজন জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী প্রকাশ পানি জসিম। অন্যজন মো. বেলাল প্রকাশ ভূমিদস্যু বেলাল। তাঁরা একাধিক মামলা কাঁধে নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন রমরমা টোকেন বাণিজ্য।
সরেজমিন দেখা যায়, নগরের বায়েজিদ থানার বাংলাবাজার মোড় থেকে ছিন্নমূল পর্যন্ত চলছে প্রায় ২৮০টি গ্রাম অটোরিকশা। যার মূল স্ট্যান্ড বায়েজিদ থানার বাংলাবাজার মোড়ে।
কয়েকজন অটোরিকশা চালক জানান, প্রতিটি গ্রাম অটোরিকশা থেকে দিনে চাঁদা আদায় করা হয় ৮০ টাকা। এ হিসাবে দিনে চাঁদার পরিমাণ ২২ হাজার ৪শ টাকা। আর মাসে চাঁদার পরিমাণ ৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা। আবার নতুন গাড়ি লাইনে ইন করাতে লাইনম্যানকে দিতে হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা!
তারা আরও জানান, প্রতিদিন গাড়ি থেকে চাঁদা তোলেন বেলাল। তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন অক্সিজেন ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও ভুয়া সাংবাদিকদের। আর পানি জসীম নিয়ন্ত্রণ করেন বায়েজিদ থানা পুলিশ ও স্থানীয় নেতাদের।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন বায়েজিদে অবৈধভাবে গ্রাম অটোরিকশা চলাচল করলেও প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রশাসনের ‘গ্রিন সিগনাল’ পেয়েই এসব অটোরিকশা চলাচল করছে।
স্থানীয়রা বলছেন, মাঝে মাঝে অক্সিজেন ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে কিছু পুলিশ এসে অভিযান চালিয়ে গ্রামের অটোরিকশা ধরে। কয়েকঘন্টা পর আবারও পানি জসিম ও বেলালের কেরামতিতে গ্রামের অটোরিকশা রাস্তায় নামতে দেখা যায়।
তবে এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী প্রকাশ পানি জসিম। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমি এর সাথে জড়িত নই। এসব নিয়ন্ত্রণ করেন ট্রাফিক ও থানার পুলিশ। আপনি ওনাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটোরিকশা চালক বলেন, প্রতিদিন বেলাল এসে ৮০ টাকা করে নিয়ে যায়। আর নতুন গাড়ি যোগ করতে হাতিয়ে নেন মোটা অঙ্কের টাকা। নতুন গাড়ি এন্ট্রি হলে কমিশন দিতে হয় অক্সিজেন মোড়ের টিআই স্যারকেও।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অক্সিজেন ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. আলমগীর হোসাইন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গ্রাম অটোরিকশা এই রুটে চলাচল করে তা জানি। মাঝেমধ্যে অভিযানও পরিচালনা করি। আর লাইনম্যান থেকে শুরু করে কারো সাথেই আমার আর্থিক লেনদেন নেই।