আজ সোমবার (২৮ জুন) সকাল থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে সীমিত লকডাউন। সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রেখে চালু রাখা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস।
এদিকে গণপরিবহন বন্ধের সুযোগে রাস্তা দখলে নিয়েছে রিকশা। যাত্রীদের রিকশা ছাড়া আসা-যাওয়ার বিকল্প কোনো পথ না থাকায় ভাড়াও বেড়েছে দ্বিগুণ, কোথাও তিনগুণ।
সকাল থেকে রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়ি পাননি অফিসযাত্রীরা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে অনেককে। যারা গেছেন তাদের ভাড়া গুণতে হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।
সরেজমিন নগরের চকবাজার, আন্দরকিল্লা, কোতোয়ালী, জামালখান, কাজির দেউড়ি লালখানবাজার, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ, অলংকার, একেখান গেট ঘুরে দেখা যায়, মোড়ে মোড়ে মানুষের জটলা। কোনো গণিপরিবহণ নেই। বিকল্প কোনো বাহনও নেই। হাতেগানা অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া হাঁকাচ্ছে। এ অবস্থায় অনেকেই পায়ে হেঁটে নিজ গন্তব্যের দিকে যাত্রা শুরু করেন। এর মধ্যে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ভোগান্তি আরও বাড়ে।
নগরের কিছু কিছু জায়গায় হাতেগোনা প্রাইভেট কার, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল চোখে পড়ে। তবে রাস্তায় বেশি ছিল রিকশা। তবে বিভিন্ন মোড়ে ছিল পুলিশের তল্লাশি চৌকি।
সকাল ৯টায় নগরের একে খান মোড়ে দেখা যায়, কয়েকশ মানুষের জটলা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রিকশা। একটি মোটরসাইকেল আসতেই কার আগে কে যাবেন এমন এক অবস্থা। অনেকেই দূর থেকে বলে উঠছেন- ভাই, জিইসি যাবেন, কাজির দেউড়ি যাবেন।
সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে সিটি গেটের সামনে দেখা গেছে, পুলিশের কড়া তল্লাশি। চলছিল গাড়ির কাজগপত্র যাচাই-বাছাই। ভাড়ায় চালিত গাড়ি চলাচলে রোধে ছিল কড়া নজরদারি।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চকবাজার মোড়ে একটি অটোরিকশা আসতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে মানুষ। শেষপর্যন্ত ভাড়ায় বনিবনা না হওয়ায় চালক যাত্রী না নিয়েই চলে যান।
আন্দরকিল্লা, কোতোয়ালী, জামালখান, কাজির দেউড়ি, লালখান বাজার, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ এলাকায়ও প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে।
গণপরিবহনের সংকটে নগরের সড়কে রিকশার দাপট চোখের পড়ার মতো। তবে পকেট কাটা যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। সুযোগ পেয়ে কয়েকগুণ ভাড়া হাঁকছে তারা। গাড়ি না পেয়ে অনেকে বাড়তি ভাড়া দিয়েই গন্তব্যের দিকে রওনা হয়েছেন।
হালিশহর থেকে চকবাজার আসা এক যাত্রী জানান, বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় ২০০ টাকা ভাড়ায় তিনি গন্তব্যে এসেছেন।
এদিকে হাতেগোনা অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের ভাড়াও আকাশচুম্বী। বাধ্য হয়েই যাত্রীরা ১০০ টাকার ভাড়া ৩০০ টাকা দিয়ে গেছেন।
এদিকে গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস। অফিসগুলোকে তাদের কর্মী আনা-নেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হলেও বহু প্রতিষ্ঠানই তা করেনি। ফলে অফিসগামীদের মাঝে ভোগান্তির সেই পুরনো চিত্রই দেখা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও সংক্রমণ হার উদ্বেগজনকভাবে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সারা দেশে ১৪ দিনের কঠোর শাটডাউন দেওয়ার সুপারিশ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সুপারিশের আলোকে সারাদেশে নতুন করে বিধিনিষেধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তিন দিনের সীমিত লকডাউন দিয়ে রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে সর্বাত্মক লকডাউন।
আলোকিত চট্টগ্রাম