নগরের রাস্তায় ‘নদী’ দেখল চট্টগ্রাম, ঘরের খাটে ‘দ্বীপ’

বর্ষার শুরু থেকেই ডুবছে নগর। জলাবদ্ধতাকে ঘিরে চট্টগ্রামের প্রধান দুই সেবাসংস্থার মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি দোষারোপের ‘প্রতিযোগিতা’।

তবে নগরবাসীর অভিযোগের আঙুল সেই দুই সেবাসংস্থা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) দিকেই। বরাবরের মতোই দুই সেবাসংস্থার ঊর্ধ্বতন নির্বাহীরা দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন পরস্পরের ঘাড়ে।

সে বির্তকের সমাধান হয়নি, মাঝখানে বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) আরেকবার ডুবেছে চট্টগ্রাম। ‘কঠোর’ বিধিনিষেধের মধ্যেই কাজে বেরিয়ে নগরের কিছু রাস্তায় রীতিমতো ‘নদী’ দেখেছেন নগরবাসী!

প্রধান রাস্তা থেকে অলি-গলি, নগরের নিম্নাঞ্চল ফের ডুবেছে বৃষ্টির সঙ্গে জোয়ারের পানিতে। বাকলিয়া, চকবাজার, চান্দগাঁও থেকে শুরু করে আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকেও জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ।

রিকশাচালকরা হেঁকেছেন চড়া ভাড়া, পথচারীদের কাপড় ভিজেছে পানিতে। মানুষের বাসা-বাড়ি থেকে প্রধান সড়ক, জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ ছিল দিনভর সঙ্গী। সন্ধ্যা নামলেও অনেক এলাকা থেকে নামেনি পানি।

সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের বাসা-বাড়ির নিচতলার বাসিন্দা ও বস্তির মানুষজন। অনেক এলাকাতেই ঘরভর্তি পানির মধ্যে ‘এক টুকরো দ্বীপের মতো জেগে থাকা’ খাটে শুয়ে-বসে দিন কাটাচ্ছেন মানুষ। কারও বাড়ির চুলাতেও ঢুকেছে পানি, উনুনে তাই জ্বলেনি আগুন।

আলোকিত চট্টগ্রামের আলোকচিত্রীকে দেখে নগরের গোসাইলডাঙার এক ভুক্তভোগী পরিবার জানায় তাদের ভোগান্তির কথা। তারা জানান, তিনদিন ধরে পানিবন্দী অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। রান্না বন্ধ ঘরে।

প্রায় একই চিত্র আশপাশের কয়েকটি ঘরেও। পানির মধ্যেই বসে আছেন ঘরের মানুষ। বেশ কয়েকটি ঘরের দরজায় পানির মধ্যেই কোলের শিশুকে নিয়ে বসেছিলেন মা।

এদিকে নগরের একাধিক এলাকার পাহাড়ে ধসের খবর মিলেছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এরআগে সকালে নগরের বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিতে বসবাসরত মানুষকে সরিয়ে নিতে মাইকিং করেন প্রশাসনের লোকজন।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সচেতন নাগরিকরা নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করেন তারা।

জেডএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!