দূর থেকে দেখে মনে হয় বাংলাদেশের ‘পতাকা’। সবুজের মাঝে লাল— কী অপরূপ সুন্দর!
বিলের চারদিকে সবুজ। আর সবুজ সেই পাতার মাঝেই লাল শাপলা। বিলজুড়ে যেন লাল-সবুজের মেলা।
সাতসকালে নগরের সাগরিকার জহুর আহম্মদ স্টেডিয়াম সংলগ্ন রেললাইনের পেছনে গেলেই চোখে পড়বে লাল-সবুজের এ খেলা।
জানা গেছে, পাঁচ শতক জমি বর্গা নিয়ে ওই এলাকায় প্রায় ১৪ বছর ধরে কৃষিকাজের পাশাপাশি শাপলার চাষাবাদ করছেন ভোলার কৃষক মো. সিরাজ। পতাকার মতো লাল-সবুজের এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন নানা বয়সের মানুষ।
কথা হয় কৃষক মো. সিরাজের সঙ্গে। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বর্গা নেওয়া ৫ শতক জমিতে কৃষিকাজের পাশাপাশি শাপলার চাষ করছি প্রায় ১৪ বছর ধরে। জমির মধ্যে থাকা পুকুরে লাগানো হয় শাপলার মুড়া। সে শাপলা ফুটে গোটা। এছাড়া পুকুরের উপর মাচাং তৈরির মাধ্যমে ঝিঙ্গা, করলা, শশা, শিম, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা জাতের সবজির চাষও করা হয়।
তিনি আরও বলেন, শাপলা চাষ লাভজনক। শাপলার রক্ষণাবেক্ষণে তেমন বাড়তি খরচ নেই। চার-পাঁচদিন পরপর পুকুর থেকে শাপলা তুলে বিক্রি করা যায়। শাপলা বিক্রি করতে বাজারে যেতে হয় না, ভোরবেলা বেপারিরা এসে শাপলা কিনে নিয়ে যান। প্রতি আটিতে ১৫টি শাপলা থাকে। পাইকারি হিসেবে প্রতিটি শাপলা ২ টাকা করে বিক্রি করি।
আরও পড়ুন: গায়ে জড়ানো ‘লাল’ সরালেই ‘সবুজ চমক’, টসটসে পেয়ারার শেকড় পাহাড়ে
শাপলাচাষি সিরাজ বলেন, করোনাকালীন সময়ে শাপলার তেমন একটা বেচাবিক্রি ছিল না। এ সময় পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করতে হয়েছে। নগরে এত বড় পরিসরে শাপলার চাষ আর কোথাও হয় বলে আমার জানা নেই।
আরো বড় পরিসরে শাপলার চাষাবাদ করার ইচ্ছে রয়েছে কৃষক সিরাজের। কিন্তু এটি করতে গেলে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। বড় একটি ঋণের ব্যবস্থা হলে হয়ত সিরাজের এ স্বপ্নও একদিন বাস্তবায়িত হবে
সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলে আরও অনেকেই লাভজনক শাপলা চাষে এগিয়ে আসবেন বলে মনে করেন সিরাজ।