ট্রাফিক পুলিশের টিআই ‘হেনস্তা’—কর্ণেলহাটে কড়া তৎপরতা, গাড়ি চলাচলও সীমিত

নগরের কর্নেল হাট মোড়ে বেড়েছে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা। প্রতিটি গাড়ির কাগজপত্র চেক করা হচ্ছে। কাগজপত্র আপডেট না থাকলে আটক করা হচ্ছে গাড়ি। ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে মামলার রশিদ। হঠাৎ পুলিশি তৎপরতা বাড়ায় এই সড়কে যান চলাচল সীমিত হয়ে এসেছে। উধাও হয়ে গেছে বৈধ কাগজপত্রবিহীন যানবাহন।

সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পুলিশের টিআই মামুনকে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ধাওয়া দেয়। এ ঘটনার পর এমন পুলিশি তৎপরতা বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে নগরের কর্নেলহাট মোড়ে সরেজমিনে ঘুরে পুলিশি তৎপরতার এমন চিত্র দেখা গেছে।

চট্টগ্রাম থেকে ভাটিয়ারী, কুমিরা সীতাকুণ্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করা বাস, ট্রাক, লরি, ড্রাম ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের কাগজপত্র চেক করা হচ্ছে। এই মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্টসহ ৭ জন ও পুলিশ লাইনের ১৫ সদস্যের বিশাল একটি টিম চেকপেস্ট বসিয়ে প্রতিটি গাড়ির কাগজপত্র চেক করছেন।

আরও পড়ুন: ‘তাণ্ডব’—আসামির তালিকায় নেই, তবু ‘ব্যবসায়ী’ ধরে নিয়ে গেল পাঁচলাইশ পুলিশ

সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত একটি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলাসহ আরও ১৫টি যানবাহন আটক করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ব্যাটারিচালিত রিবশা, বাস, ট্রাক, ড্রাম ট্রাক, লরিসহ অন্যান্য যানবাহন।

জানা গেছে, কর্নেলহাট মোড় থেকে সিটি গেইট পর্যন্ত টমটম, টেম্পুসহ বিভিন্ন ছোট যানবাহন চলাচল করে। এছাড়াও রয়েছে কার-মাইক্রো সার্ভিস। এসব যানবাহন চলে শ্রমিক নেতা ও ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করে। সঙ্গে বাস, ট্রাক, লরিসহ ভারী যানবাহনের চলাচলতো আছেই।

দীর্ঘদিন ধরে কর্নেলহাট মোড়ে চলাচল করা অবৈধ যানবাহন ও কাগজপত্র হালনাগাদ ছাড়া গাড়ি চলাচল নিয়ে পুলিশের টিআই মামুনের সঙ্গে শ্রমিকদের অসন্তোষ বাড়তে থাকে। শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ, টিআই মামুন কর্নেলহাট মোড়ে ব্যাপক চাঁদাবাজির পাশাপাশি মামলাও বেশি দেন। এছাড়া তিনি শ্রমিকের গায়ে হাতও তোলেন।

অন্যদিকে টিআই মামুনের অভিযোগ, কর্নেলহাট মোড়ে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি বন্ধে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ। এই সড়কে অনেক ভিআইপি’র ডকুমেন্ট ছাড়া গাড়ি চলাচল করে। ট্রাফিক পুলিশের কঠোরতায় তারাও ক্ষেপেছে।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ‘পুলিশের সোর্স’—অপরাধী ধরতে গিয়ে বড় অপরাধে জড়াচ্ছে

সর্বশেষ ১৪ সেপ্টেম্বর শ্রমিকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে টিআই মামুনকে ধাওয়া করে শ্রমিকেরা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টিআই মামুন বলেন, কর্নেলহাট মোড়ে অবৈধ যানবাহনকে ঘিরে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি ছিল। আমি আসার পর এই চাঁদাবাজি বন্ধে হয়ে গেছে। তদবির করেও কোনো কাগজপত্র ছাড়া যানবাহন চলতে পারছে না। তাই আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ। কোনো শ্রমিক নেতা আমার বিরুদ্ধে এক টাকার চাঁদাবাজির প্রমাণ দেখান। চ্যালেঞ্জ করব কেউ পারবে না। পারবে কেবল মিথ্যা অভিযোগ তুলতে। আমি এসবের পরোয়া করি না। আমি যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে তৎপর আছি।

এদিকে বাংলাদেশ অটোরিকশা ও হালকা যান পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘টিআই মামুন নিয়মিত ম্যাক্সিমা গাড়ি থেকে মাসোহারা নেন। সিটির পরে চলাচলকারী বাসগুলো থেকেও মাসোহারা নেন। আজকে টাকা-পয়সার জন্য আন্দোলন হয়নি। একটি গাড়িকে মামলা দেওয়ার সময় তারেক নামের এক চালককে মেরেছেন। এতে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। খবর পেয়ে শ্রমিকদের রোষাণল থেকে টিআই মামুনকে রক্ষা করেছি। শুধু আজকে নয় প্রতিদিনই শ্রমিকদের মারধর করেন তিনি। আমরা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে টিআই মামুনকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি।’

এসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!