ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৯ পরিচালককে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের পাসপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করেই বিদেশ পালানোর চেষ্টা বন্ধে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের করা আবেদনে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
রোববার (২০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
বিবাদীরা হলেন— ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপেইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান, চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, পরিচালক একেএম রেজাউর রহমান, আব্দুল মোবিন, আবু মো. ফজলে রশিদ, মনজুর মোরশেদ, আরিফুর রাহমান খান, শাহ আলম, এবিএম ফজলে রাব্বি, শাখাওয়াত হোসেন ও সাইদুল ইসলাম।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের সমীক্ষায় দেশের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড। এ প্রতিষ্ঠানের মালিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আদালতে দুহাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের মামলা রয়েছে। এসব ঋণের বিপরীতে বন্ধকি সম্পত্তির পরিমাণ অতি নগণ্য। বিবাদি খেলাপি ঋণের দায় স্বীকার করলেও দায় পরিশোধ করছেন না।
আরও পড়ুন : টাকা নিয়ে ফেরত দিচ্ছে না শাহ আমিন গ্রুপ, চট্টগ্রামে ২ পেট্রোল পাম্প বন্ধের নির্দেশ
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, দেশের বর্তমান পরিস্হিতি বিবেচনা করে বিবাদিরা দেশত্যাগের পাঁয়তারা করছেন। তাঁরা দেশত্যাগ করতে পারলে বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায় করা অসম্ভব হয়ে যাবে। এজন্য তাঁদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর ব্যাংক এশিয়ার আগ্রাবাদ শাখা ৫০৫ কোটি ৯০ লাখ এক হাজার ৯২৪ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে মামলা করে।
এদিকে বিবাদি আবু মো. ফজলে রশিদ ব্যাংকের সঙ্গে আপোসে ঋণ পরিশোধের জন্য দেড় বছর ধরে সময়ের আবেদন করছেন। এছাড়া আপোসের জন্য আংশিক ডাউন পেমেন্ট ছয় কোটি টাকা পরিশোধ করে ঋণের দায়ও স্বীকার করেছেন। কিন্তু তা পরিশোধে সদিচ্ছা দেখাননি।
অন্য বিবাদীরা মামলায় হাজিরাও দেননি। এছাড়া আপোসে দায় নিষ্পত্তির জন্য সময় দেওয়া হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি সার্কুলার অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ডাউন পেমেন্ট জমা করেননি।
এ বিষয়ে আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি বিবাদীদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন ব্যাংক এশিয়া কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। এতে ক্যাপ্টেন সোহেল হাসানকে আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। এছাড়া অন্য বিবাদীদের পাসপোর্টসহ আগামি ১৮ নভেম্বর আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বিশেষ শাখা ও বাংলাদেশ পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আরএস/আরবি