যে কারণে বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম

জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধি নিয়ে দেশজুড়ে চলছে ক্ষোভ-অসন্তোষ। একলাফে লিটারে ১৫ টাকা দাম বাড়ায় ডাক দেওয়া হয় ধর্মঘট। ৫ নভেম্বর থেকে দেশজুড়ে চলছে গণপরিবহন ধর্মঘট। এ অবস্থায় আজ শনিবার (৬ নভেম্বর) ঘোষণা দেওয়া হয় অভ্যন্তরীণ নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধেরও।

ডিজেলের দাম বাড়ায় পরিবহন সেক্টর যখন উত্তপ্ত তখন দামবৃদ্ধির ব্যাখা দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধি ও পাচার রোধে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশে এর প্রতিফলন ঘটবে। ২০১৬ সালেও জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হয়েছিল।

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সরকার গত ৪ নভেম্বর দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করেছে। যদিও আশপাশের অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য এখনো কম।

আরও পড়ুন: চিঠির উত্তর আসেনি—ফোনও, বন্ধ হলো লঞ্চ চলাচল

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, ভারতের কলকাতায় গত ৩ নভেম্বর প্রতি লিটার ডিজেলের মূল্য ছিল ১২৪.৩৭ টাকা। ২৬টি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন যে পরিমাণ পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে ঢোকে, তাও বিবেচনার বিষয়। আর পাচারের আশঙ্কা তো আছেই।

নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের দিকে যেতে হবে। বিশেষ করে গণপরিবহন বিদ্যুৎচালিত করা গেলে দেশে পরিবেশবান্ধব যানবাহন নিশ্চিত হবে। বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের ইঞ্জিনের দক্ষতা বেশি এবং সাশ্রয়ীও। এতে তেল আমদানি খরচও কমে যাবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে দেশে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৬৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল। ২০১৬ সালের এপ্রিলের ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটারে ৩ টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বিগত সাড়ে পাঁচ বছর দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য অপরিবর্তিত ছিল এবং ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ১০ হাজার কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে।

আরও পড়ুন: কর্ণফুলীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র রোববার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

এতে বলা হয়, চলতি অর্থ বছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকায় সর্বাধিক ব্যবহৃত ডিজেলের ক্ষেত্রে বিপিসি লোকসানের সম্মুখীন হয়। ডিজেলে চলতি বছরের জুনে লিটারপ্রতি ২.৯৭ টাকা, জুলাইয়ে ৩.৭০ টাকা এবং সর্বশেষ অক্টোবরে ১৩.০১ টাকা বিপিসি লোকসান গুনে। সে হিসাবে গত সাড়ে পাঁচ মাসে ডিজেলে বিপিসির লোকসানের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ১৪৭.৬০ কোটি টাকা। যা সরকারকে ভুর্তকি দিয়ে সমন্বয় করতে হবে। তাছাড়া জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে প্রায় ৩৩ হাজার ৭৩৪ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েছে বিপিসি। এ অবস্থায় বিপিসি লোকসানে চলে গেলে এসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে।

প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে গণপরিবহন ধর্মঘট চললে এর ব্যতিক্রম চট্টগ্রাম। আগামীকাল ৭ নভেম্বর (রোববার) থেকে চট্টগ্রামে চলবে গণপরিবহন।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!