চট্টগ্রাম পৌঁছেই ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ সেন্টার ও হটলাইন চালুর ঘোষণা মেয়র শাহাদাতের

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ সেন্টারসহ হটলাইন চালুর কথা জানিয়েছেন নতুন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে দায়িত্বভার গ্রহণের পর চসিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. শাহাদাত বলেন, কোনো এলাকায় ফগিং স্প্রে না হলে সে বিষয়ে জানলে সরাসরি গিয়ে সেখানে কাজ করতে হবে। কেউ যদি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যায় তার যে ডেঙ্গু এন্টিজেন টেস্ট পরীক্ষা এবং যদি মনে হয় রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ তাহলে তাকে এই জিনিসগুলো আমরা ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের আওতায় আনতে পারি। ৪১টি ওয়ার্ডে আমি যে অভিযান পরিচালনা করবো প্রতিটি ওয়ার্ডে যেসব সচিবরা রয়েছেন তাদের উদ্যোগে একটি করে ডেঙ্গু হেলথ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার থাকবে। আমাদের যে ওয়ার্ড কার্যালয় আছে সেখানে এসে আক্রান্তরা কথা বলবে। সেখান থেকে সিরিয়াস রোগীদের আমরা নির্দিষ্ট হাসপাতালে পাঠাব। এটি করতে আমি কয়েকটি হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলব। আমাদের মনে রাখতে হবে যখনই কোনো ইমার্জেন্সি আসে সেটার ওপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। এখন ইমার্জেন্সি হচ্ছে ডেঙ্গু এবং ক্লিনিং। কাজেই এটার ওপর গুরুত্ব দিয়ে এখন আমার কাজ করতে হবে। আমি অনেকদিন সময় নিয়ে নিয়েছি। আমি আবারও বসব স্ব স্ব ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে। আপনাদের কথা আরো শুনব কীভাবে সিটি করপোরেশনকে স্বাবলম্বী করা য়ায় এবং নতুন নতুন প্রজেক্ট আমি কীভাবে নিতে পারি। যাতে সিটি করপোরেশন সাধারণ মানুষের উপকারে আসে। সিটি করপোরেশন যাতে মানুষের উপকার করতে পারে এ ধরনের কথাবার্তা আপনাদের কাছ থেকে শুনব।

মেয়র বলেন, এখানে প্রাক্তন মেয়র, নগরবিদ, পেশাজীবি আছেন। আবার অনেকে ঘরে বসে কিন্তু চিন্তাভাবনা করেন। তারা হয়ত নগরবিদও নয়, পেশাজীবিও নয়। কিন্তু তারা অনেককিছুই জানেন। এ ধরনের কিছু বুদ্ধিজীবি আছেন তাদের আমারা ইনভাইট করব। আমরা চাই, আপনারা বলুন, আমরা সেটা করতে পারি কিনা দেখি।

আরও পড়ুন : নতুন মেয়র ডা. শাহাদাত যেভাবে সাজাতে চান চট্টগ্রামকে

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে শাহাদাত হোসেন বলেন, আপনারা অবশ্যই গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। আমাদের ভুল যেটা আছে সেটা ধরিয়ে দেবেন। ইনশাল্লাহ আমরা চেষ্টা করব সামর্থে্যর মধ্যে সমাধান করার। আপনারা জানেন, আমার সময় আছে দেড় বছরের কম। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে সাড়ে ৩ বছর পর যে নির্বাচনটি আমি করেছিলাম। আমাকে নির্বাচনে এত বাধাগ্রস্ত করেছে। ইভিএমের ভোটের রেজাল্ট তারা প্রিন্টেড কপি না দিয়ে হাতে লিখে দিয়েছিল। হাতে লিখে ভোট বাড়িয়ে আমাকের তারা বাজেভাবে হারিয়েছেন। যার কারণে আমি মামলা করেছিলাম। আমার মামলার কথা ছিল যেহেতু মেশিনে ভোট করেছেন আমাকের প্রিন্টেড রেজাল্টটা দেন। আপনি হাতে লিখে রেজাল্ট দিয়েছেন সেটা আমি গ্রহণ করবো না। এটাই আমার ফার্স্ট কপ্লেইন ছিল। ৭৮০টি ভোটকেন্দ্রের একটিতেও তারা প্রিন্টেড কপি দেখাতে পারেনি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সাড়ে তিন বছর পর আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। কাজেই আমি মনে করি আইনের পথ যেখানে সুগম হয়েছে, আইন প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের সব জায়গায় কিন্তু লড়াই করতে হবে। চট্টগ্রামকে সুন্দর করার জন্য, পরিচ্ছন্ন করার জন্য আইনকে আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে।

এদিকে আজ দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে সংবর্ধনা দেওয়া হয় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে। এর আগে বেলা ১২টার দিকে সোনার বাংলা ট্রেনে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে পৌঁছান তিনি। সকাল ১১টা থেকে নেতাকর্মীরা ফুল, ব্যানার, প্লেকার্ড নিয়ে সেখানে ভিড় জমান। এসময় স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে স্টেশন এলাকার আশাপাশ। পরে তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে মেয়র হজরত শাহ আমানত (র.) ও বদর আউলিয়া (র.) মাজার জিয়ারত করেন। এরপর মতবিনিময়, সংবাদ সম্মেলন এবং টাইগারপাসে চসিক কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন।

প্রসঙ্গত, ৩ নভেম্বর সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ডা. শাহাদাত হোসেনকে মেয়রের শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ।

এর আগে ভোটে কারচুপির অভিযোগে ফল বাতিল চেয়ে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত। সরকার পরিবর্তনের পর চলতি বছরের ১ অক্টোবর সেই মামলার রায়ে শাহাদাতকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন চট্টগ্রামের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ খাইরুল আমীন।

আদালতের রায় অনুযায়ী ইসি সচিবালয় ৮ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট সংশোধনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm