বন্দর নগরী চট্টগ্রামে পুলিশের অ্যাকশনে পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশ করতে পারেনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এসময় পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আটক করা হয়েছে প্রায় ২০ জনকে।
সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে নগরের চেরাগী পাহাড়, মোমিন রোড ও জামালখান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে আটক ও আহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
আজ দুপুর তিনটায় নগরের জামালখানে প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কিন্তু বিক্ষোভ সমাবেশ শুরুর আগেই সেখানে সতর্ক অবস্থান নেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ফলে সেখানে কোনো শিক্ষার্থী জড়ো হতে পারেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে চেরাগী পাহাড় মোড়ে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। সেখানে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তারা স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি-তর্কাতর্কিতে জড়ান তারা। এসময় বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। আটক শিক্ষার্থীদের ছাড়াতে আন্দোলনকারীরা পুলিশের প্রিজনভ্যান আটকানোর চেষ্টা করলে সেখানে পুলিশের সঙ্গে আবারও হাতাহাতি-তর্কাতর্কি হয়।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে ২ দিন যেভাবে চলবে কারফিউ
এরপর বিকেল ৪টার দিকে আন্দোলনকারীরা কদম মোবারম শাহী জামে মসজিদের সামনের সড়ক অবরোধ করে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছুড়ে। এরপর পুলিশ লাঠিপেটা করে আন্দোলনকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। এসময় পুলিশ-সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বিক্ষোভকারীরা জেএমসেন হলের সামনের রাস্তা দিয়ে চলে যায়।
এদিকে বিকেল ৫টার দিকে নগরের আন্দরকিল্লায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ফের পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
অন্যদিকে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চট্টগ্রাম নগরে বিক্ষোভ সমাবেশের ‘সমাপ্তি’ ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘চট্টগ্রামে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারগ্যাস ছুড়ছে। বোনদের ওপর পুলিশি হামলা করা হয়েছে। আমরা আজকের কর্মসূচি সমাপ্তি ঘোষণা করছি। পরবর্তী আপডেট জানানো হবে।
যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, আজকের বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিনা অনুমতিতে বিক্ষোভ শুরু করলে আমরা তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু তারা বিনা উসকানিতে পুলিশের ওপর হামলা শুরু করে। এসময় প্রায় ২০ জনকে আটক করা হয়। তাদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এছাড়া ৪ জন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম