ছয় বছর আগে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে সিলগালা করা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর) কার্যালয় আরইসরা ভবন পুনরুদ্ধার করে নতুনভাবে উদ্বোধন করেছে সংগঠনটি।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টায় নগরেরর ডিসি রোডের আরইসরা ভবনে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম।
এসময় ছাত্রশিবির সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, স্বৈরাচারী সরকার অন্যায়ভাবে এই কার্যালয় তালবদ্ধ করে রেখেছিল। তাওহীদি জনতার নেতৃত্বে আজ আবার নতুন করে এই কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক বাধার অবসান হতে যাচ্ছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সবসময় সত্যের পক্ষে থাকবেন। আপনারা জাতির বিবেক, জাতিকে সত্যটা পৌঁছে দিবেন। জাতি উপকৃত হবে, স্বাধীনতার সুখ উপভোগ করবে। ইসলামী ছাত্রশিবির একটি সমৃদ্ধ ও কল্যাণমূলক সংগঠন। যার মাধ্যমে মানবতার কল্যাণ হয়, এটিই রাষ্ট্রের প্রত্যাশা।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে যুবদল নেতার হাতের কবজি কেটে নিলেন আওয়ামী লীগ নেতা
জামায়াতের মহানগরের আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, এটা শুধু ইসলামী ছাত্রশিবিরের কার্যালয় না, তরুণ, যুবক ও ছাত্রদের মাঝে দাওয়াত পৌছে দেওয়ার জন্য ছাত্ররা নিজেরা এক টাকা, দুই টাকা, একশ টাকা দিয়ে আরইসারা প্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বিগত সরকারের পেটুয়া বাহিনী এই কার্যালয়ে অবৈধভাবে তালা ঝুলিয়েছিল।
ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবকলীগের দুস্কৃতিকারীরা আরইসরার প্রত্যেকটি জানালা, কম্পিউটার, বাতি, ফ্যান, চেয়ার, টেবিল বইসহ প্রায় চার কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধ নিতে চাই না। ছাত্রশিবির মাফ করতে জানে, কারণ মাফ করা রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সুন্নাত। সবসময় কার্যালয়ে কার্যক্রম চালাতে স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ডা. সাদেক আব্দুল্লাহ, প্লানিং এন্ড ডেভোলোপমেন্ট সম্পাদক ডা. উসামা রাইয়ান, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ফখরুল ইসলাম, সেক্রেটারি তানজীর হোসেন জুয়েল, অর্থ সম্পাদক মুমিনুল হক ও অফিস সম্পাদক খুররম মুরাদ।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর সন্ধ্যার পর অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করতে চকবাজার ডিসি রোডের এলাকায় ব্লক রেইট দেয় পুলিশ। এ সময় চন্দনপুরা ডিসি রোডের আরইসরা ভবনে শিবিরের মহানগর কার্যালয়ে চার-পাঁচটি বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে অভিযান শুরু করে পুলিশ।
তৎকালীন নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান জানিয়েছিলন, ছাত্রশিবিরের কার্যালয়ে বিস্ফোরণের শব্দ শুনে পুলিশ নগর গোয়েন্দা ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেয়া হয়। চারতলা ভবনের প্রতিটি কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে লালটেপ মোড়ানো ৬টি ককটেল, আড়াই লিটার অকটেন, কাঁচের টুকরো, গান পাউডারসহ বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া যায়। অভিযানের পর ভবনটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় চকবাজার থানার এসআই আনিসুর রহমান বাদী হয়ে ছাত্রশিবির নগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা করেন।
আরএস/আরবি