চট্টগ্রামে চোরাকারবারের লাভের ভাগ নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড

চট্টগ্রামে চোরাকারবারের লাভের ভাগ নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড ঘটে গেছে। লাভের অংশ নিতে রাতের আঁধারে ঘরে ঢুকে চালানো হয় ভাংচুর। ডাকাতি চলছে ভেবে প্রতিবেশীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে এগিয়ে আসে। গণধোলাইয়ের রক্তাক্ত হন দুজন। পরে পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠায়।

শনিবার (১৫ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৌলভীবাজার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর হওয়া বাড়িটি স্থানীয় বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলমের বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খোরশেদ আলম সাম্পান চালক হলেও দীর্ঘদিন ধরে নদীপথে চোরাই তেলসহ অবৈধ ব্যবসায় জড়িত। এসব কাজ চালানোর জন্য তিনি আনু মিয়া নামে এক যুবককে নিজের ছেলের মতো বাড়িতে রাখতেন। তবে লাভের ভাগ নিয়ে হঠাৎ দুজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।

স্থানীয়রা জানান, আনু মিয়া চোরাকারবার থেকে লভ্যাংশের দাবি করলে খোরশেদ তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে কয়েক মাস আগে নগরের বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় আনু মিয়া ও তার সহযোগী সেলিম ধারালো অস্ত্র দিয়ে খোরশেদকে কুপিয়ে আহত করেন।

পরে আশপাশের লোকজন খোরশেদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় খোরশেদ আদালতে মামলা দায়ের করলে আনু মিয়া ও সেলিম জামিনে মুক্ত হন। মামলাটি মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে কয়েক দফা বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি।

এদিকে শনিবার রাতে আনু মিয়া (৩৫), জানে আলম (৩৪), মো. বাদশা (২৮), সৈকতসহ (৩২) কয়েকজন খোরশেদের বাড়িতে যান। এরপর লাভের ভাগের দ্বন্দ্বের জেরে ঘরে ভাঙচুর চালান। এ সময় বাড়ির লোকজন ও স্থানীয়রা ডাকাত সন্দেহে চিৎকার করলে গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে এগিয়ে আসে। এতে গণধোলাইয়ে আহত হন আনু মিয়া ও জানে আলম। বাকিরা পালিয়ে যান।

পরে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে কর্ণফুলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আহত দুজনকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে পাঠান।

এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. শরীফ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, এটি ডাকাতির ঘটনা নয়। টাকা লেনদেন কিংবা চোরাকারবারের লভ্যাংশ নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুরের কিছু আলামত পাওয়া গেছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আহতদের চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আহতদের বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। তবে যারা হামলায় জড়িত তারা কর্ণফুলীর চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর ৮ নম্বর এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। বাড়ির মালিক খোরশেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

জেজে/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm