চট্টগ্রামের পটিয়ার রাজন দত্ত (৩৭) নামে এক যুবক কক্সবাজারগামী পর্যটন এক্সপ্রেসের চলন্ত ট্রেনে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্নহনন করেছেন।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
আত্নহননের আগে নিজের ডায়েরিতে একটি চিরকুট লিখে যান রাজন। যেখানে লিখা ছিল— আমি (রাজন দত্ত) মনে করি, আমার এই জন্মের সকল উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়েছে, তাই আমায় এখন এই জীবন ত্যাগ করে চলে যেতে হবে। আমার এই চলে যাওয়াতে কারো কোনো হাত নেয়। তাই সকলের প্রতি আমার অনুরোধ, অকারণে কাউকে কোনো দোষ দিবেন না কিংবা কাউকে হয়রানি করবেন না, আমার থেকে কেউ কোনো টাক-পয়সা পাবে না কিংবা আমার নামে কোনো অর্থ নেয়। সকলের মঙ্গল হোক, বিদায় !!!
রাজন পটিয়ার ধলঘাট ইউনিয়নের দত্তপাড়া এলাকার মৃত মিলন দত্তের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকাল ৮টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কক্সবাজারগামী পর্যটন এক্সপ্রেস ট্রেনটি পটিয়া ধলঘাট স্টেশন অতিক্রম করার সময় চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন রাজন দত্ত। মুহূর্তেই রাজনের দেহের পা ও কোমর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে তার পরিবারের সদস্যরা মরদেহ শনাক্ত করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রতিবেশী তন্ময় দে বলেন, রাজন দত্ত খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ধলঘাট এলাকায় একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করতেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি চাকরি না পেয়ে মানসিকভাবে বেশ চাপে ছিলেন। এ কারণে হয়ত তিনি চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহনন করেছেন।
এদিকে নিহত রাজনের এক সহপাঠী নাম প্রকাশ করার না শর্তে বলেন, কিছুদিন আগে রাজনের বিয়ের জন্য মেয়ে দেখছিল তার পরিবার। কিন্তু সে কোনোভাবেই রাজি ছিল না। সে অত্যন্ত মেধাবী ছেলে। ইতোমধ্যে কয়েকটি চাকরির জন্য আবেদনও করেছিল, কিন্তু কোনো চাকরি হয়নি। সে এভাবে তার জীবনটা শেষ করে দিবে বন্ধু হিসেবে কোনোদিন কল্পনাও করিনি। আমরা একজন ভালো বন্ধুকে হারালাম।
যোগাযোগ করা হলে ষোলশহর রেলওয়ে জিআরপি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (ইনচার্জ) আবুল কাশেম বলেন, পটিয়া ধলঘাট এলাকার রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করি। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কেএ/আলোকিত চট্টগ্রাম