ক্লিফটন গ্রুপ—১০ লাখ টাকা মেরে ছিনতাই নাটক, ধরা খেল লাখপতি পিয়ন

চট্টগ্রামে ক্লিফটন গ্রুপের পিয়নের ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ চেষ্টা ভণ্ডুল করে দিয়েছে পুলিশ। টাকা আত্মসাতে ছিনতাই নাটক সাজিয়েও নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটির পিয়ন মো. আব্দুর রহিম প্রকাশ রিপন।

দীর্ঘ জেরা শেষে তাকে ধরা দিতে হয়েছে পুলিশের হাতে, ফেরত দিতে হয়েছে আত্মসাত করা টাকাও। এ ঘটনায় রিপনের এক বন্ধুকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নগরের কোতোয়ালী থানার কাজির দেউড়িস্থ ব্র্যাক ব্যাংক থেকে গত ১২ সেপ্টেম্বর ১০ লাখ টাকা উত্তোলনের পর তা আত্মসাতের পর আত্মগোপন করে পিয়ন রিপন। পরে বাড়ি ফিরে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিনতাই নাটক সাজায় রিপন। কিন্তু ডিবি পুলিশের তদন্তে শেষ পর্যন্ত ঘটনা স্বীকার করতে হলো ক্লিফটন গ্রুপের ফিনিশিং বিভাগে পিয়ন পদে কর্মরত রিপনকে।

আরও পড়ুন: ‘রক্তাক্ত ১৬ শ্রমিক’ ক্লিফটন গ্রুপের গাড়ি উল্টে গেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে

এ ঘটনায় রিপনের সহযোগী ও পাহাড়তলীতে রেলওয়েতে কর্মরত মো. সেলিমকেও (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। নগরের টাইগারপাস রেলওয়ে কলোনির কোয়ার্টারে বন্ধু সেলিমের বাসায় টাকাগুলো রেখে আসে রিপন। পরে পুলিশ ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে আলমারির লকার থেকে ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করে।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ক্লিফটন গ্রুপের ওই কর্মচারীকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে তার বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়। রিপনের বাড়ি সিলেটে। বাসা চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার মতিয়ারপুল এলাকায়।

ওসি নেজাম বলেন, রিপন প্রায় সময় বড় অঙ্কের টাকা ব্যাংক থেকে তুলে, আবার ব্যাংকে জমা দিত। ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে হিসাবরক্ষক মো. সাহেদের নির্দেশে রিপন ব্র্যাক ব্যাংক কাজির দেউড়ি শাখা থেকে চেক মারফত ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করে। সেই টাকা নুপুর মার্কেট এলাকায় স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ব্র্যাক ব্যাংক থেকে টাকা তোলার পর থেকে মোবাইল বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যায় রিপন। এ ঘটনায় সাহেদ কোতোয়ালী থানায় ওইদিনই মামলা দায়ের করেন।

আরও পড়ুন: রাতের আঁধারে এটিএম বুথের দরজা ভাঙছিল ৩ যুবক

তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে রিপনের অবস্থান শনাক্ত করি নগরের মেহেদিবাগের ন্যাশনাল হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে দেখি রিপন প্রায় অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছেন। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার শরীরে অস্বাভাবিক কিছুই পাওয়া যায়নি বলে আমাদের জানান। এতে আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা রিপনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। সে নানাভাবে অভিনয় করে আমাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। রাতেই আমরা তাকে থানায় এনে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে রিপন ছিনতাইয়ের কাহিনী বললেও তদন্ত করে এর কোনো সত্যতা আমরা পাইনি। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবদে সে আসল তথ্য স্বীকার করে।

ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রিপন জানায় কিছুদিন আগে রাজীব নামে এক বন্ধুর সঙ্গে থাই গ্লাসের ব্যবসা শুরু করে রিপন। সেই ব্যবসায় প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো লোকসান হয়। সেই লোকসান পুষিয়ে নিতে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছিল রিপন। আর আত্মসাতের ঘটনা আড়াল করতে ডিবি পুলিশের ছিনতাই নাটক সাজায় রিপন ও সেলিম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে ধরা পড়তে হলো।

এসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!