মাটির কাঠামোগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা, তাতেই রঙের প্রলেপ বসাচ্ছেন রাকেশ। কল্পনায় দেবী যেমন, ঠিক তেমন আদলেই চোখ ফোটাচ্ছেন তিনি। পায়ে আলতা দিচ্ছেন, আর নখ রাঙাচ্ছেন লালে। এভাবেই কল্পনার দেবী দুর্গাকে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে খড়, বাঁশ ও মাটির তৈরি কাঠামোয়।
আনোয়ারা উপজেলা সদরের জয়কালী শিল্পালয়ে গেলে দেখা মেলে মৃৎশিল্পী রাকেশ রায়ের এই শিল্পকর্ম। প্রায় অর্ধযুগ ধরে তিনি এখানে প্রতিমা তৈরি করছেন। উপজেলার বেশিরভাগ প্রতিমাই নির্মাণ করা হয় এখানে।
রাকেশ রায় আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, এখন তো দম ফেলার ফুরসত নেই। শেষ সময়ে এসে ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। রঙের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন প্রতিমার গায়ে পোশাক জড়ানোর কাজ চলছে। এবার অর্ডার অনেক বেড়েছে। আমার প্রতিষ্ঠান ৫২টি প্রতিমা নির্মাণের অর্ডার পেয়েছে।
তিনি বলেন, করোনার কারণে গতবছর পূজায় উৎসবের আমেজ ছিল না। প্রতিমার অর্ডারও অনেক কম ছিল। তবে এবার ভালোই অর্ডার পেয়েছি। শেষ সময়েও অনেকে অর্ডার নিয়ে এসেছিলেন। সময় না থাকায় কয়েকজনকে ফিরিয়ে দিয়েছি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা। দেবী দুর্গার পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ রূপ পাচ্ছে লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশ ও সরস্বতীর প্রতিমা।
এদিকে রোববার মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হয়েছে পূজার আড়ম্বর। দিন-রাত পরিশ্রম করে মৃৎশিল্পীরা তাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি করছেন দৃষ্টিনন্দন সব প্রতিমা। আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে দেবী বন্দনা। ৫ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান চলার পর ৫ অক্টোবর মহাদশমীর মধ্যদিয়ে শেষ হবে প্রতিমা বিসর্জন।
দুর্গাপূজার সর্বশেষ প্রস্তুতির বিষয়ে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুগ্রীব মজুমদার দোলন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ১২০টি মণ্ডপে সর্বজনীন পূজা এবং ১৩৫ মণ্ডপে ঘটপূজা হবে। আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। এর মধ্যে প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। আশা করি, সবার সহযোগিতায় সুন্দরভাবে পূজা সম্পন্ন হবে।