শেষের পথে চলে এসেছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেলের নির্মাণকাজ। কর্ণফুলী নদীতে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণকাজের অগ্রগতি প্রায় ৮৭ শতাংশ।
প্রকল্পের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে টানেল নির্মাণ সম্পন্ন হবে। মূল টানেল ও সংযোগ সড়কের সিংহভাগ কাজ শেষ করার কথা জানালেও শহরের দক্ষিণপাড় আনোয়ারা প্রান্তে টানেলের সুফল পেতে আরও পাঁচটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা।
এর মধ্যে রয়েছে টানেলগামী যানবাহনের জন্য ওজন স্কেল স্টেশনের সুনিদির্ষ্ট অবস্থান, গোলচত্বর থেকে কত ফুট দূরে হবে ওজন স্কেল। তা না হলে পতেঙ্গাকূলে ওজন স্কেল বসানো। না হয় অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের ফলে টানেলের গোলচত্বর এলাকায় যানজট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, টানেলের সঙ্গে সংযুক্ত আনোয়ারা প্রান্তের পিএবি সড়কে ইউলুপ না থাকা, মেরিন একাডেমি থেকে সিইউএফএল পর্যন্ত সড়কের অপ্রশস্ততা কিংবা ক্ষুদ্রতা, সংযুক্ত সড়কে চার লেনের সেতু না থাকা ও টোল আদায়ে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু না হলে সমস্যা তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এছাড়া টানেলের সংযোগ সড়ক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্মাণাধীন ছয় লেন সড়কের মোড়ে টানেল থেকে আসা গাড়িগুলোর ডান দিকে বাঁক নিতেও সমস্যা তৈরি হতে পারে। এসব সমস্যা সমাধানের সুপারিশ করেছে বলে সূত্রে জানা যায়।
কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হওয়ার পরও যানজট ও ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা থেকে যাবে বলে সংশয় প্রকাশ করেছেন পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহসভাপতি ও সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞ সুভাষ বড়ুয়া। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, টানেল এলাকায় উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের দোহাজারী অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং ছয় লেন সড়কের প্রকল্প পরিচালক সুমন সিংহ বলেন, কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে না। যেহেতু ডিসেম্বরে টানেল চালু হবে, সেজন্য ছয় লেন সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইউলুপসহ অন্যান্য সুপারিশ বাস্তবায়নে নতুন করে প্রকল্প নেওয়া হবে। তবে তা ডিসেম্বরের আগে হবে না।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের প্রথম এই টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে টানেলের প্রতিটি সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। দুই সুড়ঙ্গে দুটি করে মোট চারটি লেন থাকবে। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক থাকবে। আর আনোয়ারা প্রান্তে রয়েছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ উড়ালসেতু। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৭ শতাংশ। টানেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।