করোনার এমন দুঃসময়ে জমজমাট অনলাইন পশুরহাট। এবারে কোরবানে অসংখ্য মানুষ গরু কিনেছেন অনলাইনে। বলতে গেলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একেবারে নিজের পছন্দমতো গরু বেছে নিয়েছে ঘরে বসেই।
সোমবার (১৯ জুলাই) চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮৫২টি গরু বিক্রি হয়েছে অনলাইনে। যার বিক্রিমূল্য প্রায় ৪২ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
নগরের কোরবানির পশুর বাজারগুলো এবার করোনায় নতুন ‘হুমকি‘ হয়ে উঠতে পারে বলে জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তাই করোনা থেকে বাঁচতে অনলাইনেই গরু কেনাকাটা সেরেছে সচেতন ক্রেতারা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর চট্টগ্রামে ৩৭টি অনলাইন প্লাটফর্মে সোমবার পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬৬টি পশু আপলোড করা হয়। এরমধ্যে বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪০৬টি পশু। যার বিক্রিমূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। খামার থেকে সরাসরি বিক্রি হয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার কোরবানি পশু।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে গরু বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে।
অনলাইনে বিক্রেতারাও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে পশু কিনেছেন। অনলাইনে গরু-ছাগল কেনা কয়েকজন ক্রেতা জানান, এ বছর চট্টগ্রামে অনলাইনে পশু বিক্রিতে বেশ ভালোই সাড়া পড়েছে। পশুর হাটের ভিড় এড়াতে আমরাও অনলাইনকে বেছে নিয়েছি। প্রতিষ্ঠিত খামারগুলো থেকে মানুষ বেশি গরু কিনেছে।
এমনই এক ক্রেতা খুলশীর বাসিন্দা ব্যবসায়ী হাবিব। অ্যাজমায় আক্রান্ত তিনি। বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁর অ্যাজমার সমস্যা বেড়েছে। তাই চিকিৎসক ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের কেউই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যান না। এবার হাবিব ঘরে বসেই অনলাইনে সারলেন পশু কেনার ঝামেলা। আড়াই লাখ টাকা দিয়ে কিনলেন গরু।
তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ঘরের কোনো সদস্য যদি পশুহাটে যান তাহলে আমার জন্য বেশি ঝুঁকি রয়েছে। ঝামেলা ছাড়াই অনলাইনে কোরবানির পশু কিনে স্বস্তি পাচ্ছি৷
অনলাইন পশুরহাট থেকে মোবাইল কিংবা ল্যাপটপের মাধ্যমে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কোরবানির পশু পছন্দ করছেন। ওজন, জাত ও অন্যান্য বর্ণনা দেখে ঘরে বসেই পছন্দ অনুযায়ী পশু কিনছেন। ব্যাংক, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ ও সরাসরি আর্থিক লেনদেনের সুবিধা নিয়েছেন। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেক খামার মালিক ও পশু ব্যবসায়ী গরু বিক্রি করেছেন।
এবারের অনলাইন বাজারে নিজস্ব খামারের ৩৪টি গরু বিক্রি করেছেন নগরের ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের আমানবাজার খোশালশাহ এলাকার অ্যাডভোকেট মো. সাইদুজ্জামান সাইদ।
তিনি বলেন, আমার খামার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনলাইন ও পশুহাটের অন্তর্ভুক্ত। এ পর্যন্ত আমি ৩৪টি গরু বিক্রি করেছি। ঝামেলামুক্ত বেচাকেনায় ব্যাংক ও ক্রেডিট কার্ড এবং বিকাশের মাধ্যমে লেনদেন সম্পন্ন করেছি।
অনলাইনে শুধু পশু কেনা নয়, রয়েছে কসাই সার্ভিসও। কোরবানির দিন পশু জবাই ও মাংস কেটে তা পৌঁছে দেওয়ার সুবিধাও রেখেছেন অনেকে।
সিএম/ডিসি