ওয়ান ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস থেকে ঋণখেলাপি সাঈদ হোসেন চৌধুরীকে অপসারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে সস্ত্রীক আট কোটি ৭৫ লাখ ৩৩ হাজার ২৮৭ শেয়ার হস্তান্তর না করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
মামলার বিবাদীরা হলেন-চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ বানিজ্যিক এলাকার ২/এফ এইচআরসি সিন্ডিকেটের চেয়ারম্যান ও মালিক সাঈদ হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রী পরিচালক ফারজানা চৌধুরী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম।
আরও পড়ুন : সেই পাপ্পীকে ধরতে আদালতের নির্দেশ, উদ্ধার করতে হবে কোটি টাকার যন্ত্রাংশও
আদেশে উল্লেখ করা হয়, সাউথইস্ট ব্যাংকের ১৫ কোটি তিন লাখ ৮৩ হাজার ৮১৫ টাকা খেলাপি ঋণের মামলার রায়ের আগে বিবাদীদের আট কোটি ৭৫ লাখ ৩৩ হাজার ২৮৭ শেয়ার অগ্রিম ক্রোকের আবেদন করা হয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে। তবে ঋণখেলাপি ব্যক্তি ব্যাংকিং কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোন ব্যাংকের ডিরেক্টর পদে থাকার যোগ্য নন। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে সাঈদ হোসেন চৌধুরী ওয়ান ব্যাংকের ডিরেক্টর পদে নিয়োজিত আছেন। যা ব্যাংক ও আর্থিক খাতে সুশাসনের ঘাটতিকে স্পষ্ট করে তোলে। ঋণখেলাপি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরও ওয়ান ব্যাংকে সাঈদ ডিরেক্টরের পদ বহাল থাকায় খেলাপি ঋণ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত অবস্হান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতার প্রয়োগ করে সাঈদ হোসাইনকে ওয়ান ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস থেকে অপসারণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আদেশের কপি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবরে পাঠানো হোক। এসময় বিবাদী পক্ষের আইনজীবী আপত্তি দাখিলে মৌখিকভাবে সময়ের আবেদন করলে আদালত তা নাকচ করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, সাঈদ হোসেন চৌধুরীর নামে ওয়ান ব্যাংকের বি ও হিসাব নম্বর ১৬০২৩৬০০০১৫০০২১৭ ও ডিপি নম্বর ৮০ এর হিসাব অনুযায়ী চার কোটি আট লাখ ছয় হাজার ৮৫ শেয়ার রয়েছে। যার মূল্য ১০ টাকা হারে ৪০ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ৮৫০ টাকা। এছাড়া তার স্ত্রী ফারজানা চৌধুরীর নামে ওয়ান ব্যাংকের চার কোটি ৬৭ লাখ ২৭ হাজার ২০২ শেয়ার রয়েছে। যার মূল্য ১০ টাকা হারে ৪৬ কোটি ৭২ লাখ ৭২ হাজার ২০ টাকা।
সাঈদের ক্রোকাদেশ জারির জন্য শেয়ার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-ওয়ান ব্যাংক, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সেঞ্জ কমিশন, বি ও হিসাব সংশ্লিষ্ট যে কোন প্রতিষ্ঠান ও শেয়ার সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজ।
এদিকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৭১ কোটি ৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪৯ টাকা খেলাপি ঋণের মামলা আদালতে চলমান রয়েছে।
আরএস/আরবি