‘এসপি বাবুলের’ বৌ মিতু—কিলিং মিশনের ভোলা জামিন পেলেন

বহুল আলোচিত চট্টগ্রামের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলায় এহতেশামুল হক ভোলাকে চার সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জামিনের মেয়াদ শেষে তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন। নিহত মিতুর বাবার করা মামলায় ভোলাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। আদালতে ভোলার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মু. হাসিবুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান।

আরও পড়ুন: মিতু হত্যায় সাবেক এসপি বাবুলের জড়িত থাকার প্রমাণ যেভাবে পেল পিবিআই

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামে গুলি করে মিতুকে হত্যা করা হয়। খুনিরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নগরের পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন এসপি বাবুল আক্তার। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৬ জুন মো. আনোয়ার ও মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আদালতে এ দুজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের মূল ‘পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে মুছার নাম আসে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি নগরের বাকলিয়া এলাকার এহতেশামুল হক ভোলা সরবরাহ করে বলে জবানবন্দিতে বলা হয়। মুছা ও ভোলা এসপি বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে পরিচিত। এরপর পুলিশ ভোলা ও তার সহযোগী মনিরকে একটি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করে।

পরে মুছার ভাই সাইদুল ইসলাম সাক্কু এবং মো. শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম রাশেদ ও নুরুন্নবী নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ওইবছরের ৫ জুলাই তারা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। পরে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশে ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান ভোলা।

স্ত্রী মিতু হত্যার ঘটনার জেরে পুলিশের চাকরি ছাড়তে হয় বাবুল আক্তারকে। ওই হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তার জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়। পুলিশ তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদও করে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হয়। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে গতবছর জানুয়ারিতে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ‘পুলিশের সোর্স’—অপরাধী ধরতে গিয়ে বড় অপরাধে জড়াচ্ছে

পিবিআই’র তদন্তে মিতু হত্যায় বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা উঠে আসে। এরপর বাবুল আক্তারের শ্বশুর বাদি হয়ে গত ১২ মে বাবুলকে আসামি করে পৃথক একটি মামলা করেন। এ মামলায় বাবুল আক্তার এখন কারাবন্দি।

এদিকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মুছাকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে ধুম্রজাল রয়েই গেছে। পুলিশ বলছে মুছা পলাতক। তার সন্ধানদাতাকে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয় পুলিশ। তবে মুছার স্ত্রী পান্না আক্তার ওইবছরের ৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, ওই বছরের ২২ জুন বন্দর থানার তৎকালীন ওসি মহিউদ্দিন সেলিমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল মুছাকে গ্রেপ্তার করে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!