শুরু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা౼মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

সারাদেশে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। দেশে প্রায় ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

এরমধ্যে চট্টগ্রামে অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৪ হাজার ৮৭৪ জন। যার ৩৬ হাজার ৯২৯ জন ছাত্র এবং ৩৭ হাজার ৯৪৫ জন ছাত্রী।

শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা যায়, এবারের পরীক্ষায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২৬৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১ লাখ ১ হাজার ১০২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। বিজ্ঞান বিভাগে ১১ হাজার ২০ জন ছাত্র ও ৯ হাজার ৩৪০ জন ছাত্রীসহ মোট ২০ হাজার ৩৬০ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।

মানবিক বিভাগে রয়েছে ৪৪ হাজার ১৪৪ জন। যার ১৮ হাজার ৭২৯ জন ছাত্র ও ২৫ হাজার ৪১৫ জন ছাত্রী।

এছাড়া ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে অংশ নিচ্ছে ৩৬ হাজার ৫৮৯ জন পরীক্ষার্থী। যার ২০ হাজার ২৩২ জন ছাত্র ও ১৬ হাজার ৩৫৭ জন ছাত্রী। এদের সঙ্গে গার্হস্থ্য বিভাগ থেকে ৯ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেবে।

আরও পড়ুন : আগের সময়েই এইচএসসি পরীক্ষা—কোচিং সেন্টার নিয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত

এবার চট্টগ্রাম জেলায় মোট পরীক্ষার্থী ৭৪ হাজার ৮৭৮ জন, কক্সবাজারে ১২ হাজার ৭১৬ জন, রাঙামাটিতে ৪ হাজার ৭৬১ জন, খাগড়াছড়িতে ৫ হাজার ৮৫৩ জন এবং বান্দরবানে রয়েছে ২ হাজার ৮৯৪ জন।

করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্নের লক্ষ্যে বাড়ানো হয়েছে কেন্দ্র। এবার পরীক্ষা হবে ১১২টি কেন্দ্রে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ১১টি বিশেষ ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া কাজ করবে ৬০টি সাধারণ ভিজিল্যান্স টিম। পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল সাড়ে ৯টায় কেন্দ্রে ঢুকতে হবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হচ্ছে। তিনটি বিষয়ে ছয়টি পত্রের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে একজন শিক্ষার্থীকে।

প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে বোর্ড থেকে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

* করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে হবে।

* অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের পর পরীক্ষাকেন্দ্রে আসলে রেজিস্টারে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে। বিলম্বে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রতিদিন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানাবেন।

* কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যতীত পরীক্ষাকেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন এবং মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না।

* কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।

* অননুমোদিত ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

* ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত হতে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরা কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রশ্নপত্র বহনের কাজে কালো কাঁচযুক্ত মাইক্রোবাস বা এরূপ কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।

আরও পড়ুন : এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সূচি প্রকাশ

* প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা কর্মকর্তা (ট্যাগ কর্মকর্তা) নিয়োগ দিতে হবে। ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত হতে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তার মনোনীত উপযুক্ত প্রতিনিধি বা ট্যাগ কর্মকর্তাসহ প্রশ্নপত্র গ্রহণ করে পুলিশ প্রহরায় কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন।

* নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা কর্মকর্তার (ট্যাগ কর্মকর্তা) উপস্থিতি ব্যতীত প্রশ্ন বের করা যাবে না বা বহন করা যাবে না।

* ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত হতে পরীক্ষার কেন্দ্রে বহুমুখী নির্বাচনি প্রশ্নসহ রচনামূলক বা সৃজনশীলের সব সেটের প্রশ্ন নিতে হবে।

* প্রশ্নের সেট কোড পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে। সেই অনুযায়ী নির্ধারিত সেট কোডে পরীক্ষা নিতে হবে।

* কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ কর্মকর্তা), কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে বিধি অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।

* পরীক্ষা চলাকালীন ও পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আগে বা পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ব্যতীত অন্যদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। এসময়ে কেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

* অনিবার্য কারণবশত কোনো পরীক্ষা বিলম্বে শুরু করতে হলে যত মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু হবে পরীক্ষার্থীদের সে সময় থেকে যথারীতি প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত নির্ধারিত সময় দিতে হবে।

* পরীক্ষাকেন্দ্রে ও প্রশ্ন পরিবহনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে।

* সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত গুজব কিংবা এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নজরদারি জোরদার করবে।

* প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের নিকট উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!