হাত ভাঙল নবজাতকের—ডাক্তারের ‘অবহেলা’ ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে

সিজার করতে গিয়ে নবজাতকের হাতের হাড় ভেঙে ফেলা হয়েছে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে! অভিযোগ— জন্মের পর পরিবারের লোকজন নবজাতকের শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে তা গোপন করে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডাক্তারের অবহেলার কারণেই এটি হয়েছে। কারণ অপারেশন থিয়েটারে ছিলেন না কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার।

জানা যায়, ১৯ আগস্ট অন্তঃসত্ত্বা সাবরিনা সুলতানা ভর্তি হন ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে। সকাল ১০টায় ডা. শিরিন ফাতেমার তত্ত্বাবধানে সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। জন্মের পর বাম হাত কম নড়াচড়া করায় নবজাতককে নন ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিউ) হস্তান্তর করা হয়। এ সময় নবজাতকের বাম হাতের হাড় ভাঙা বলে জানান চিকিৎসকরা।

২০ আগস্ট চিকিৎসকরা নবজাতকের কোমরে বা অন্য কোথাও সমস্যা আছে কিনা জানতে ডায়গ্লোসি করার কথা বলেন।

আরও পড়ুন: ‘চুরি’ যাওয়া নবজাতক ভিজছিল বৃষ্টিতে, অবশেষে উদ্ধার

এ ব্যাপারে রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে ব্যর্থ হন। তাদের বিল মওকুফ করেছে জানিয়ে হাসপাতাল ছাড়তে বলেন কর্তৃপক্ষ।

নবজাতকের মা সাবরিনা সুলতানা বলেন, অপারেশন থিয়েটারে ডা. শিরিন ফাতেমা উপস্থিত ছিলেন না। অন্য চিকিৎসকরা সিজার করেছেন। এ সময় তিনি চিকিৎসকদের মুখে উদ্বেগ দেখতে পেয়েছিলেন বলে জানান।

সাবরিনা বলেন, অবস্থা খারাপ হলে চিকিৎসকরা তখন ম্যাডামকে ‘তাড়াতাড়ি ডাক’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। এরপর ডা. শিরিন ফাতেমা অপারেশন থিয়েটারে আসেন। নবজাতকের হাত ফোলা ও নড়াচড়া না করার কথা বারবার জানানো হলেও চিকিৎসকরা তা কেয়ার করেননি। উল্টো বলেন, ৮-১০ দিনের মধ্যে হাত সুস্থ হয়ে যাবে, দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এ সময় একজন অর্থোপেডিক চিকিৎসক নবজাতকের চিকিৎসা করেন।

নবজাতকের বাবা মো. সালাউদ্দিনের অভিযোগ, হাড় ভাঙার বিষয়ে তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও অবশেষে বহু চাপাচাপির পর ডা. ফয়সাল নামের এক চিকিৎসক নবজাতকের হাতের হাড় ভাঙার বিষয়টি জানান।

আরও পড়ুন: পার্কভিউ হাসপাতাল—’বিনা খরচে’ ৪ ঘণ্টার অপারেশন, পঙ্গুত্বকে জয় করলেন এতিম যুবক

এদিকে নবজাতকের হাড়ভাঙার বিষয় জানাতে অস্বীকৃতি জানানোয় ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সালাউদ্দিন।

নবজাতকের মামা রবিন বলেন, আমাদের সঙ্গে হাসপাতালের কেউ এ বিষয়ে কথা বলছে না। চিকিৎসার বিল মওকুফ করে আমাদের হাসপাতালের ছাড়পত্র দিতে চাইলেও আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি। আমরা চাই আমাদের সঙ্গে যা হয়েছে তা যেন আর কারো সঙ্গে না হয়।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!