ইউপি নির্বাচন−কথার উত্তাপে সংঘর্ষের শঙ্কা

মিরসরাইয়ে নির্বাচনি মাঠে কথার উত্তাপে সংঘর্ষের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। খইয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহফুজুল হক জুনু (নৌকা) ও বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরীর (ঘোড়া) কারণে এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।

এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী জাহেদ ইকবাল চৌধুরীকে শোকজ করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা।

জানা গেছে, সোমবার (৮ নভেম্বর) বেলা ১২টায় মিরসরাইয়ের স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন খৈয়াছড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহফুজুল হক জুনু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্য নেতারা।

এ সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী অভিযোগ করেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের জাহেদ ইকবাল চৌধুরী দলের মনোনয়ন না পাওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে স্থানীয় নেতাদের সম্পর্কে প্রকাশ্যে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পারিবারিক বিষয়ে এবং তাঁর মৃত বাবা সম্পর্কে কটূক্তি করেছেন। যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এ ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য নির্বাচনি আচরণবিধির সরাসরি লঙ্ঘন।

আরও পড়ুন : প্রতারণা করা হয়েছে—মিরসরাইয়ে গণসংযোগ বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর

জানা গেছে, গত ৫ নভেম্বর প্রথমবারের মতো নিজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নির্বাচনি গণসংযোগে নামেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের জাহেদ ইকবাল চৌধুরী। এ সময় একটি পথসভায় বক্তব্যে তিনি মাহফুজুল হক জুনু সম্পর্কে ‘জুনু ক্লাস টু’ এবং তার সঙ্গে যারা প্রচারণায় নেমেছেন তাদের অনেককে নিজের পরিবারের চাকর-চাকরানী বলে উল্লেখ করেন। যার একটি ভিডিও ক্লিপ এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।

এদিকে সোমবার সকালে চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহেদ ইকবাল চৌধুরীকে শোকজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মিরসরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল চন্দ্র পোদ্দার। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অপ্রাসঙ্গিক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া এবং গত রোববার জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত না থাকায় চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহেদ ইকবাল চৌধুরীকে শোকজ করা হয়েছে। তাকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত উত্তর দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনের অপরাধে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন : মিরসরাইয়ে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ালেন ৭ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১০৯ জন

এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহফুজুল হক জুনু অভিযোগ করে বলেন, শনিবার (৬ নভেম্বর) উপজেলা প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জাহেদ ইকবাল চৌধুরী নির্বাচনি মাঠে আমার বিরুদ্ধে যে আসবে তাকে কচুকাটা করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহেদ ইকবাল চৌধুরী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমি বলেছি প্রচার-প্রচারণা শেষ হওয়ার পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনো বহিরাগত ক্যাডার আমার নির্বাচনি এলাকায় অনুপ্রবেশ করলে জনগণকে নিয়ে তাদের কচুকাটা করা হবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার শোকজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি একটি চিঠি পেয়েছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি এর লিখিত জবাব দেব।

‘কচুকাটা’ কথার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, ওই সভায় আমি উপস্থিত ছিলাম। বক্তব্যটি কোন ভাষায় দিয়েছেন তা অতটা খেয়াল করতে পারিনি। তবে একটি অডিও রেকর্ড আছে বলে আমি এবং জেলা প্রশাসক মহোদয় জেনেছেন। এ বিষয়ে জাহেদ ইকবাল চৌধুরীকে ওই নির্বাচনি এলাকার রিটার্নিং কর্মকর্তা ডা. শ্যামল চন্দ্র পোদ্দার শোকজ করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আজিজ/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!