এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ খ্যাত হালদা নদী। এ নদী রক্ষায় বিভিন্ন অভিযান চালিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন। সেই সঙ্গে অনেক পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু এবার তার হাটহাজারী-অধ্যায়ের সমাপ্তি হচ্ছে।
কিছুদিন পর জাতীয় চা বোর্ডে উপসচিব হিসেবে যোগ দিচ্ছেন সরকারের সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার এই কর্মকর্তা।
২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে যোগদান করেন রুহুল আমিন। এরপর উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন ও পৌরসভার উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি ভেজালবিরোধী অভিযান চালান তিনি। সেই সঙ্গে মনোযোগ দেন দেশের জাতীয় সম্পদ হালদা নদীর দূষণরোধ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায়। আর সেক্ষেত্রে তিনি সফলও হয়েছেন। হালদায় নির্বিচারে মাছ শিকার, ইঞ্জিনচালিত নৌকার অবাধ বিচরণ, ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, গৃহস্থালীর বর্জ্য, পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের বর্জ্য, এশিয়ান পেপার মিলের বর্জ্য ফেলা বন্ধ করেন।
মা মাছ ও ডলফিন শিকার, বালু উত্তোলন এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল বন্ধে ১৭৮টি অভিযান পরিচালনা করেছেন ইউএনও রুহুল আমিন। এসব অভিযানে ১ লাখ ১৫ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করেন তিনি। এছাড়া ধ্বংস করেছেন বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত ৫৩টি নৌকা ও ১৫টি ড্রেজার।
গত ৬ জুলাই শেষ অভিযান চালান হালদায়। অভিযানে তিনি হালদাপাড়ের বাসিন্দাদের বুঝিয়েছেন, দেশে হালদা নদীর গুরুত্ব কতটা। হালদার সাত্তারঘাট কুম, নয়াহাট কুম, মাছুয়াঘোনা কুম ও রামদাস মুন্সিরহাট কুমে স্থাপন করেন সাইনবোর্ড।
বদলির বিষয়ে ইউএনও রুহুল আমিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ‘হাটহাজারীতে আসার পর অফিসে বসে না থেকে সাধারণ মানুষের কাছে আসার চেষ্টা করেছি। মিডিয়া ও সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় মানুষের জন্য কাজ করে গেছি। সরকারি চাকরিতে বদলি স্বাভাবিক। হালদা আমাদের জাতীয় সম্পদ। মহামূল্যবান এ প্রাকৃতিক সম্পদ ভালো থাকুক, নিরাপদ থাকুক। দায়িত্বপালনে হাটহাজারীবাসী, গণমাধ্যমকর্মী, হালদার দুই পাড়ের সচেতন মানুষের যে সহযোগিতা পেয়েছি, তা আজীবন মনে থাকবে।’
সিএম/ডিসি