ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ—বিএনপি নেতা আসলামের বিচার শুরু

ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর বিচার শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও দুই ভাইয়েরও বিচার হবে এ মামলায়।

বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য আগামী ২ মার্চ দিন ধার্য করেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুনসি আবদুল মজিদ।

এদিন ৪ আসামির মধ্যে শুধু বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: মুক্তি মিলছে না বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর

দুদকের আইনজীবী কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, চার আসামির মধ্যে আসলামের স্ত্রী জামিলা নাজনীন মাওলা জামিনে আছেন। তাঁর দুই ভাই জসিম উদ্দিন চৌধুরী ও আমজাদ হোসেন চৌধুরী পলাতক। তাঁদের সবার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই এবি ব্যাংকের ৩২৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের উপসহকারী পরিচালক মানিকলাল দাশ বাদি হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসলাম চৌধুরীর পারিবারিক মালিকানাধীন রাইজিং স্টিল লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি পুরনো জাহাজ কিনতে ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনটি ঋণপত্রের (এলসি) বিপরীতে এবি ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৩২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৫ টাকা ঋণ নেয়। কিন্তু এ ঋণ আর পরিশোধ হয়নি।

রাইজিং স্টার লিমিটেড ওই শাখায় প্রথম এলসি খোলে ২০০৮ সালে। দুই বছর পর প্রতিষ্ঠানটি ৪০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা দামে পুরনো জাহাজ আমদানি করে। সেই জাহাজ বিক্রি করলেও ব্যাংকের ঋণের পুরো টাকা পরিশোধ করেনি।

আরও পড়ুন: জমি দখল থেকে অর্থ আত্মসাৎ—চেয়ারম্যান কাজলের সর্বাঙ্গে দাগ

প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাংক ২০ কোটি ৮২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা পাওনা থাকার পরেও ২০১১ সালে আরও একটি এলসির মাধ্যমে একটি জাহাজ আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়। এই এলসির বিপরীতেও প্রতিষ্ঠানটি ২৬ কোটি ৪৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকার ঋণ পরিশোধ করেনি।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে ১৬৫ কোটি ৫২ লাখ ৬০ হাজার ৬০০ টাকা এবং ২০১৩ সালে ১৩৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৬ হাজার টাকার দুটি এলসির বিপরীতে আরও দুটি জাহাজ আমদানি করে। জাহাজ দুটি বিক্রি করলেও পরিশোধ করেনি কোনো টাকা।

বিপুল পরিমাণ ঋণের বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটি ১৭ কোটি ৪০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা মূল্যের সম্পত্তির দুটি দলিল ও তিনটি চেক জামানত হিসেবে দেয়। জামিনদার ছিলেন আসলাম চৌধুরী নিজেই।

আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় দণ্ডিবিধির ৪০৯, ৪২০, ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলাটি করা হয়। ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট তদন্ত শেষে দুদক এই মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেয়।

আরও পড়ুন: ডিবির হাতে অপহরণের ‘নাটক’ সাজিয়ে মালিকের টাকা আত্মসাতের চেষ্টা

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকায় গ্রেপ্তার হন আসলাম চৌধুরী। তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের মামলা করা হয়। এ মামলায় তিনি ছয় বছর ধরে কারাবন্দী আছেন।

আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!