আকাশ ভেঙে পড়েছে আবছারদের মাথায়, ভেসে গেছে ৮ কোটি টাকার মাছ

আল আরাফাহ ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে খামারে মাছ চাষ করেছিলেন পুঁইছড়ি ইউনিয়নের নাপোড়া গ্রামের বিছমিল্লাহ মৎস্য খামারের মালিক নুরুল আবছার। ভালোই চলছিল তাঁর ব্যবসা।

কিন্তু পাহাড়ি ঢল তাঁর সবকিছু কেড়ে নিলো। দুই দিন আগে ৩০ জুন টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢল নেমে তাঁর সব মাছ ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সবকিছু হারিয়ে এখন কপালে হাত আবছারের।

এমন চিত্র বাঁশখালী উপজেলার প্রায় সব মৎস্যচাষির। পাহাড়ি ঢলে তাদের ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেড় হাজার পুকুর ও ৭০টি চিংড়িঘের। অনেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। তাদের টাকার সঙ্গে মাছও ভেসে যাওয়ায় মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে।

টানা বৃষ্টিতে উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে অনেক গ্রাম। সেই সঙ্গে পুকুর ও মৎস্য প্রকল্পগুলোর ওপরে প্রায় ৫ ফুট পর্যন্ত পানি হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাঁশখালীর পূর্বাঞ্চলের অধিকাংশ গ্রামে টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেছে ঘরবাড়ি, মৎস্য খামার ও ক্ষেত। পাহাড়ি ঢলের পানি পশ্চিমাঞ্চলে নিষ্কাশিত হতে না পারায় এখনো প্লাবিত হয়ে আছে বিস্তীর্ণ ধানের জমি ও ক্ষেত। এতে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিছমিল্লাহ মৎস্য খামারের মালিক নুরুল আবছার বলেন, ১০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেছিলাম। কিন্তু পাহাড়ি ঢলে আমার ১২ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এমনকি পাহাড়ি ঢলে আসা বালিতে আমার খামার প্রায় ভরে গেছে।

বাঁশখালী উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা উম্মুল ফারা বেগম তাজকিরা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ‘বাঁশখালী পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নে টানা বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে ১৫০০ পুকুর ও ৭০টি চিংড়িঘেরে প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমাদের জরিপে দেখা গেছে, ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার মাছ, ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার চিংড়ি, ৫০ লাখ টাকার পোনা এবং ১০ লাখ টাকার পিএল ক্ষতি হয়েছে। আমরা মৎস্যচাষিদের মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে পুরোদমে ব্যবসা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

উজ্জ্বল/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!