টেকনাফে মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় ৬ রোহিঙ্গা ডাকাতকে আটক করেছে কোস্টগার্ড। এসময় তাদের কাছ থেকে ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৮৬ রাউন্ড গোলাবারুদ, বিপুল পরিমাণ মাদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (২ জানুয়ারি) রাত আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার শাহ পরীর দ্বীপের নাফ নদীর মোহনায় খড়ের দ্বীপ থেকে তাদের আটক করা হয়।
এদিকে আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোস্টগার্ডের লে. কমান্ডার (মিডিয়া) আব্দুর রহমান।
আটকরা হলেন- টেকনাফ উপজেলার ঠ্যাংখালি এলাকার ১৩ নম্বর রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হোসেন আহমেদের ছেলে মো. ইব্রাহিম (২৩), সুলতান আহমেদের ছেলে মো. আরিফ (৩৩), নুর হাকিমের ছেলে মো. মাহমুদুর রহমান (১৮), একই উপজেলার উনচিপ্রাং এলাকার ২২ নম্বর রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. আমিন (৩৩), হাশেমের ছেলে মো. কানিজ (২৪) ও উখিয়া উপজেলার বালুখালী এলাকার ১৪ নম্বর রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সৈয়দ আহমেদের ছেলে মো. নবী হোসেন (২৮)।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আমেরিকার সামরিক বাহিনীর অস্ত্র!
কোস্টগার্ড জানায়, সোমবার (২ জানুয়ারি) রাত আনুমানিক ১টার দিকে টেকনাফ উপজেলার শাহ পরীর দ্বীপের নাফ নদীর মোহনায় অস্ত্রধারীরা মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে সেখানে কোস্টগার্ডের সেন্টমার্টিন স্টেশনের একটি বিশেষ টিম অভিযান চালায়। এসময় কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল স্পিড বোট নিয়ে টেকনাফ সদরের দিকে পালাতে থাকে।
এদিকে কোস্টগার্ডও ডাকাত দলের পিছু নেয় এবং টেকনাফ স্টেশনকে জানায়। এরপর টেকনাফ স্টেশনের আরেকটি বিশেষ টিম ডাকাতদের স্পিড বোটকে ধাওয়া শুরু করে। পালানোর একপর্যায়ে টেকনাফের রঙ্গিখালী এলাকার নিকটবর্তী খড়ের দ্বীপে ডাকাত দলকে নামিয়ে দিয়ে স্পিডবোটটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়। ডাকাতরা জনবিচ্ছিন্ন এ দ্বীপের বনে লুকিয়ে পড়ে।
এরপর কোস্টগার্ডের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন স্টেশনের দুটি টিম যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৬ ডাকাতকে আটক করে। এসময় তাদের দেওয়া তথ্যে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৩টি একনলা বন্দুক, ২টি এলজি, ১টি শর্ট গান, ৬টি দেশি পিস্তল, ৪টি পিস্তলের ম্যাগজিন, ৪৫০ রাউন্ড তাজা গোলা, ৩৬ রাউন্ড ফাঁকা গোলা, ৪টি রামদা, ২০ হাজার পিস ইয়াবা, ২১ বোতল বিদেশি মদ, ৫৫১ ক্যান বিয়ার, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৭ সেট পোশাক, ১টি হ্যান্ডকাফ, ১টি ল্যান্ডফোন ও ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে লে. কমান্ডার (মিডিয়া) আব্দুর রহমান বলেন, খড়ের দ্বীপটি টেকনাফ সদর থেকে দূরবর্তী, বিচ্ছিন্ন ও জনশূন্য হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি, মাদক, মানব পাচারসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছিল বলে গোয়েন্দা তথ্য ছিল আমাদের কাছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ড সদস্যরা ৯ ঘণ্টার যৌথ অভিযান শেষে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ, মাদকসহ ৬ ডাকাতকে আটক করে।