অস্তিত্ব সংকটে ইলিয়াস ব্রাদার্স, জেলের ভয়ে ‘পরিবার’

শিল্প গ্রুপ ‘ইলিয়াস ব্রাদার্স বর্তমানে কাহিল অবস্থায়। পুরনো সুনাম খুইয়ে নাম উঠিয়েছে শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপির তালিকায়। ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প গ্রুপটি ব্যাংক ঋণের কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। আর এবার পুরো পরিবারই শঙ্কায় রয়েছে জেলে যাওয়ার।

অগ্রণী ব্যাংকের ৬৬৮ কোটি টাকা আদায়ে সামসুল আলমের মা ও বউসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অগ্রণী ব্যাংকের আবেদনে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) এ আদেশ দেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান। এ ঋণের বিপরীতে নেই কোনো বন্ধকি সম্পত্তিও!

গ্রেপ্তারের আদেশ পাওয়ারা হলেন— ইলিয়াছ ব্রাদার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সামসুল আলম, ইলিয়াছ ব্রাদার্স লিমিটেড কোম্পানি ও এডিবল অয়েল রিফাইনারি ইউনিট-২ এর চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, পরিচালক মো. নুরুল আলম, তাদের মা জয়নাব বেগম ও পরিচালক (ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্ত্রী) কামরুন নাহার বেগম।

আরও পড়ুন : ‘ইলিয়াস ব্রাদার্স’—বাবার সুনাম ‘শেষ’ ছেলে সামসুর হাতেই, ধরার আদেশ ৫ পরিচালককে

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, অগ্রণী ব্যাংকের ৬৬৮ কোটি ৬০ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৬ টাকা আদায়ে মামলায় বিবাদীদের গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়েছে। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ বিবাদীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তবে এ ঋণের বিপরীতে কোনো বন্ধকি সম্পত্তি নেই।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি অগ্রণী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা ২৬০ কোটি নয় লাখ ৯৮ হাজার ১৭ টাকা আদায়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে। ২০১৫ সালের ৪ জুন ব্যাংকের পক্ষে এ টাকার জন্য রায়-ডিক্রি দেওয়া হয়। একই বছরের ১৮ নভেম্বর পাওনা আদায়ের জন্য অর্থঋণ জারি মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ২০২২ সালের ৭ জুলাই পর্যন্ত বিবাদীদের কাছ থেকে ৬৬৮ কোটি ৬০ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৬ টাকা পাওনা আদায়ে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এর বিপরীতে বিবাদীরা উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন।

২০২২ সালের ২৯ আগস্টের সেই রিট পিটিশনে বিচারপতি জাফর আহমদ এবং বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান এ জারি মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। তবে অর্থঋণ আদালতে ওই আদেশের সার্টিফাইড কপি জমা দেওয়া হয়নি।

এদিকে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল উচ্চ আদালতের বিচারপতি মো. ইকবাল কবির এবং বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান ওই রিট মামলাটি খারিজ করে দেন। এর মধ্যে বিবাদীরা অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে সোলেনামা করে শর্ত ভঙ্গ করেন। ঋণের বিপরীতে বন্ধকিনসম্পত্তি না থাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতে আবেদন করে অগ্রণী ব্যাংক।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২০২৩ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী ইলিয়াস ব্রাদার্স (প্রা.) লিমিটেডের ঋণের স্থিতি ৯৬৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। যার পুরোটাই খেলাপি। এ টাকা বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm